Quantcast
Channel: Bangladesh Study Forum
Viewing all 635 articles
Browse latest View live

অক্টোবরের সেরা তিন লেখককে পুরস্কার দিলো বিডিএসএফ

$
0
0

বাংলাদেশ স্টাডি ফোরামের ১০৯ তম পাবলিক লেকচারে অক্টোবর, ২০১৭ এর সেরা তিন লেখককে পুরস্কার দেওয়া হলো। বিডিএসএফ মনে করে বইয়ের চেয়ে শ্রেষ্ঠ উপহার আর হতে পারেনা। তাই তিনজন লেখকের করকমলে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বই হস্তান্তর করে বিডিএসএফ নিজেকে সম্মানীত মনে করছে!
অক্টোবরে এ প্রকাশিত লেখাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বাধিক পঠিত তিনটি লেখা ছিল:
নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প ‘ললিতা’: যাকে যায়না ভোলা-সানজিদা বারী
কেমন ছিলেন ঢাবির প্রথম ভিসি পি. জে. হার্টগ-আহমেদ দীন রুমি
আলুর পাঁচালী-সাইফুল্লাহ ওমর নাসিফ
তিনজন যে বইগুলো উপহার পেয়েছেন সেগুলো পাঠকদের জ্ঞাতার্থে জানিয়ে দেওয়া হলো। সেগুলো হলো:

সানজিদা বারীকে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও বাংলাদেশ স্টাডি ফোরামের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শিমুল চন্দ্র সরকার

আবু সয়ীদ আইয়ুবের ‘পথের শেষ কোথায়’ পেলেন সানজিদা বারী। এডওয়ার্ড সাঈদের ‘রিপ্রেজেন্টেশনস অব দ্য ইনটেলেকচুয়াল’ বইটি পেলেন সাইফুল্লাহ ওমর নাসিফ। আর রেংকিনের ‘ঢাকা ডায়রী’ গেলো আহমেদ দীন রুমির ঝুলিতে!

সাইফুল্লাহ ওমর নাসিফ করে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন সাইমুম রেজা পিয়াস

বাংলাদেশ স্টাডি ফোরাম থেকে আপনাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
আশা করছি আমরা নিয়মিত আপনাদের কাছ থেকে অসাধারণ বই পাবো। আপনারাও যদি সেই সম্মানের অংশীদার হতে চান তাহলে আপনার সেরা লেখাটি পাঠিয়ে দেন বিডিএসএফ ওয়েবসাইটে!

স্মর্তব্য বিডিএসএফ একটি জ্ঞানভিত্তিক সংগঠন। আমাদের অধীত জ্ঞান প্রকাশের তিনটি উপায়; বলা, লেখা ও করা। আমাদের নিয়মিত আড্ডা ও পাবলিক লেকচারগুলোতে প্রথমটি সম্পন্ন হয়। দ্বিতীয়টি আমরা নিয়মিত লেখার মাধ্যমে করতে পারি; সেজন্য রয়েছে ফেসবুক গ্রুপ, পেজ ও ওয়েবসাইট। আর আপনার জ্ঞানের সর্বোত্তম প্রকাশ ঘটবে আপনি যখন কিছু করতে পারবেন। আপনার অধীত ও চর্চিত জ্ঞান দিয়ে চলমান বা আসন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।

বিডিএসএফ এই তিনটি কাজই একসাথে করতে চায়। বিডিএসএফ এর আদর্শ সদস্য হওয়া মানে যারা এই কাজগুলো নিয়মিত করে যাওয়া। বিডিএসএফ শুধু সৌখিন বিদ্যাচর্চার প্লাটফর্ম নয়। আমাদের বিদ্যাচর্চার সাথে সাথে জাতীয়, মানবিক ও সময়ের দায় নিতে হবে তবেই জ্ঞানচর্চা অর্থবহ হবে।

আপনার জ্ঞানচর্চার স্মারক সেরা লেখাগুলো পাঠিয়ে দিন আমাদের ওয়েবসাইটে। প্রতি মাসে সর্বাধিক পঠিত ও গুরুত্বপূর্ণ লেখাগুলোর জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরস্কার-মহামূল্যবান বই!

লেখা পাঠান: author@bdsfbd.com এ। এছাড়া বিডিএসএফ এর ফেসবুক পেজেও ইনবক্স করতে পারেন।

The post অক্টোবরের সেরা তিন লেখককে পুরস্কার দিলো বিডিএসএফ appeared first on Bangladesh Study Forum.


ক্লাসিক পাঠ সমাপনী উৎসব- লেকচার নোট

$
0
0

বাংলাদেশ স্টাডি ফোরাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক্লাসিক  পাঠ সমাপনী উৎসব’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।  সাবিদিন ইব্রাহিমের প্রাণবন্ত উপস্থাপনার মাধ্যমে শুরু হয় বাংলাদেশ স্টাডি ফোরামের ১০৯তম পাবলিক লেকচার । শুরুতেই তিনি মানবজীবনের উদ্দেশ্য ও সমস্যা সমাধানে ক্লাসিক বুক সিরিজের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন অনেক বই পড়েও আপনার বা সমাজের জন্য কাজে আসবেনা যদি না তা আপনার চিন্তার জগতকে নাড়া দেয় ।  আর ক্লাসিক বুক সিরিজের এমন দশটি বইয়ের প্রয়োজনীয়তা আগেও ছিল ,এখনো আছে আবার আগামীতেও থাকবে।

প্রথমেই প্লেটোর সক্রেটিসের জবানবন্দি নিয়ে আলোচনা করেন সাগর বড়ুয়া।

কাহলিন জিবরানের দ্য প্রোফেট নিয়ে আলোচনা করেন মেহেদী আরিফ। বিংশ শতাব্দীর সেরা লেখা দ্য প্রফেট ১৯২৩ সালে প্রকাশিত হয়  মূলত জীবন কি? এবং জীবনকে জানার জন্য বইটি বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা দেয় যার শুরু ভালোবাসার মধ্য দিয়ে এবং শেষ হয় অনেকখানি আশা জাগিয়ে। ভালবাসা যখন হাতছানি দেয় তখন তার পিছনে ছোটা উচিত সেটা  যত কঠিনই হক না কেন তাছাড়া আরো  বিভিন্ন বিষয়ে বলা হয়েছে তার মধ্য উল্লেখযোগ্য হলো  #সন্তানদেরকে ইচ্ছা অনুযায়ী চলতে দেয়া আর  তাদের ভালবাসা দিতে পারার কথা বলা হয়েছে কিন্তু তাদের উপর চিন্তা চাপিয়ে দেওয়া যাবেনা এরপর জিবরান দান সম্পকে কাউকে না জানানো ও যারা সাহায্যের কথা বলতে পারেনা তাদেরকেও সাহায্য দিতে বলেছেন  এছাড়াও তিনি আপরাধ হলে তার প্রতিবাদ করা,মনের কলুষতা দুর করা ও সল্প ভাষী হতে বলেছেন।

রালফ ওয়াল্ডো এমারসন এর সেলফ রিলায়েন্স এর ১০ টি আইডিয়া  নিয়ে আলোচনা  করেন সাইফুল্লাহ ওমর নাসিফ। আমরা অনেক সময় আইডিয়া কে বাস্তবায়ন করতে পারিনা কিন্তু সেসব আইডিয়া নিয়েও অন্যরা ভাল কিছু করতে পারে তাই আইডিয়া বাস্তবায়নটা জরুরী। নিজের  Strength ও Weakness জানলে এগিয়ে যাওয়া সহজ হবে সাথে সময়কে গুরুত্ব দিতে হবে। তারপর পাছে লোকে কিছু বলে এটা থাকা যাবেনা আর যারা নতুন কিছু করতে হলে ইতিবাচক চিন্তা করার পাশাপাশি হতাশ হওয়া যাবেনা পাশাপাশি শিক্ষা নিতে হবে  Nature এর কাছ থেকে কারোণ ইউনিকদের কোন শিক্ষক থাকেনা।

মাহফুজ আব্দুল্লাহ আলোচনা করেন নিকোলো ম্যাকিয়াভেলির দ্য প্রিন্স নিয়ে যেখানে লেখক রাজপুত্র লরেনজো কে তার জ্ঞান উপহার হিসেবে পাঠান । বইটি মুলত রাষ্ট্র দর্শন নিয়ে লেখা  যেখানে রাষ্ট্রপ্রধান কেমন হবে এসব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ।যেমন নতুন কোন রাষ্ট্র জয় করলে সেখানে গিয়ে রাজাকে বসবাস করতে বলা হয়েছে এবং সেখানকার জনগণকে খুশি রাখতে হবে সেইসাথে হয় কাউকে আদর করতে হবে না হয় সর্বনাশা আঘাত হেনে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে তা না হলে সে প্রতিশোধ নেবার জন্য বদ্ধ পরিকর হয়ে উঠবে।

প্লেটোর দ্য রিপাবলিক নিয়ে আলোচনা করেন সবিদিন ইব্রাহিম যেখানে রিপাবলিকের প্রধান চরিত্র প্লেটো তার গুরু সক্রেটিসের মৃত্যুদন্ড হয় মেজরিটির রায়ে  তাই তিনি গনতন্ত্রকে নিচুদের শাসন বলেছেন।  তিনি আইডিয়াল স্টেট এর ধারণা দেন যেখানে শুধু ফিলোসোফার কিং রা থাকবে এবং কবিদের বিরোধিতা করেছেন কারণ তারা তারা রাষ্ট্রের জন্য খারাপ হতে পারে।

ইয়স্তন গার্ডারের সোফির জগৎ নিয়ে আলোচনা করেন সানজিদা বারি। আমরা কে কিংবা কোথা থেকে এসেছি এসব বিষয়ের উত্তর খুজতে ও নিজের দর্শন জানতে একই সাথে দার্শনিকদের মত চিন্তা করতে হলে এই বইটি আপনাকে অনেক বিষয়ের চিন্তার জগৎ প্রসারিত করতে পারে এসব ব্যাপারেই তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন।

সান জুর দ্য আর্ট অব ওয়ার নিয়ে আলোচনা করেন সাইদুর রহমান শ্রাবণ। সান জু বলেছেন যে তার নীতি পুরোপুরি অনুসরণ সে অবশ্যই যুদ্ধে বিজয়ী হবে। সানজু নিজেকে জানা একই সাথে শত্রুকে জানার কথাও বলেছেন এবং শত্রুকে পরিকল্পনা না জানানো পাশাপাশি তার দূর্বল জায়গায় আঘাত করার কথা বলেছেন  এক্ষেত্রে পানির নীতি অনুসরণ করার যেতে পারে ,পানি যেমন উচু জায়গায় বাধার সম্মুখীন হয়ে থেমে গিয়ে আরও অধিক শক্তি সঞ্চয় করে এগিয়ে যায়। এছাড়াও যুদ্ধের ক্ষেত্রে Battle Field ঠিক করা ও লিডারশীপ এর উপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

এছাড়াও চানক্য নীতিশাস্ত্র নিয়ে কথা বলেন মাহফুজা মাহদি।

পুরো লেকচারের উপর সাইমুম রেজা পিয়াস মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন যে , চানক্য বন্ধু গঠন করার ক্ষেত্রে প্রতিবেশি কে বাছাই না করার কথা বলেছেন কারণ তার সাথে সবসময় কোন না কোন বিষয় নিয়ে ঝামেলা থাকবেই কিন্তু তিনি প্রতিবেশির বন্ধুর সাথে বন্ধুত করার কথা বলেছেন যেমন এখন বাংলাদেশ মিয়ানমারের বন্ধু রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত করে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান করতে  পারে।

লিখেছেন :

সাব্বির আহমেদ

শিক্ষার্থী, লোকপ্রশাসন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

The post ক্লাসিক পাঠ সমাপনী উৎসব- লেকচার নোট appeared first on Bangladesh Study Forum.

রহস্যের সন্ধানে ‘দ্য ভিঞ্চি কোড’

$
0
0

বিখ্যাত থ্রিলার ঔপন্যাসিক ড্যান ব্রাউন ‘দ্য ভিঞ্চি কোড’ এর জন্য সবচেয়ে বেশী পরিচিত। সিম্বল, কোড ব্রেকিং, গোপন সংঘ, ষড়তন্ত্র তত্ত্বের মিশেল- তাঁর বইগুলোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য যা কিনা পাঠককূলকে সহজেই আকৃষ্ট করে। তাঁর লেখনির এমনই শক্তি যার ফলে পুরো বই পড়া শেষ না করা পর্যন্ত মনে শান্তি পাওয়া যায়না। তার রচিত ‘দ্য ভিঞ্চি কোড’ তেমনি একটি বই। ২০০৩ সালে প্রকাশিত ও বইটি বিশ্বজুড়ে ‘বেস্টসেলার’ হয় এবং ২০০৯ সাল পর্যন্ত ৮০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়। বইটি প্রায় ৪৫টি ভাষায় অনূদিত হয়।

বইটির কাহিনী আবর্তিত হয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এর ধর্মীয় প্রতীক বিদ্যার অধ্যাপক রবার্ট ল্যাংডন ও সোফি নেভুর প্যারিস এর ল্যুভর জাদুঘরে ঘটে যাওয়া একটি খুনের ঘটনার তদন্ত নিয়ে। গল্পের শুরতে দেখা যায় প্যারিসের লুভর মিউজিয়ামের কিউরেটরের বিভৎসভাবে মৃত্যু হয়। কিন্তু তার ভেতরেও থেকে যায় রহস্য। অদ্ভুতভাবে একধরণের চিহ্ন রেখে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। বোকা বনে যায় পুলিশ। ঘটনাচক্রে মৃত্যুটির সাথে জড়িয়ে পড়েন হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির সিম্বলজির প্রসেফর রবার্ট ল্যাংডন। প্রচ্ছন্নভাবে খুনের দায় গিয়ে পড়ে তার উপর। সাহায্য করতে এগিয়ে আসে একজন মহিলা পুলিশ। তারপর শুরু হয় অভিযান। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার অভিযান। আস্তে আস্তে কিছু আশ্চর্য সত্যের সম্মুখিত হতে থাকে ল্যাংডন। বেরিয়ে আসে কিছু সত্য যা আগে কেউ জানতো না। ফলে চরম এক ষড়যন্ত্রের জালে জড়িয়ে পড়ে সে।

গল্পের পরবর্তী অংশে দেখা যায় হাজার বছরের একটি সিক্রেট লুকিয়ে ছিল একটি গুপ্তসংঘ গোষ্ঠীর কাছে। সে গুপ্তসংঘের সিক্রেট লালন করে আসছেন লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, আইজ্যাক নিউটন, ভিক্টর হুগো, বত্তিচেল্লীর মত জগদ্বিখ্যাত ব্যক্তিরা। কালক্রমে এই গুপ্তসংঘের মাত্র চারজন মানুষ এর কাছে ছিল এ সিক্রেটটি লুকোনো। কিন্তু সিক্রেটটি প্রকাশ করার দাবিতে ঐ একই খুনির হাতে তারা সবাই একসাথে এক রাতে খুন। খুন হওয়ার আগে এক সিক্রেট রক্ষাকারী সিক্রেটটি হস্তান্তর করে যান তারই বংশধরের কাছে। সিক্রেট টি সরাসরি কারো হাতে তুলে দেওয়া হয়নি, দেওয়া হয়েছিল সূত্র, গোলকধাঁধা, সিক্রেটটিতে পৌঁছনোর জন্য। কেনই বা হাজার বছর ধরে একটি সিক্রেট সোসাইটি সেই সত্যকে সঙ্গোপনে লালন করে আসছে, সিক্রেট হস্তান্তরের মাধ্যমটি নিয়েই আবর্তিত হতে থাকে কাহিনি। ঘটনাচক্রে জড়িয়ে পড়েন একজন সিম্বলজিস্ট, মূলত যাকে ঘটনায় ইচ্ছাবশতই জড়িয়েছিলেন স্বয়ং খুনের শিকার চার জনের মাঝে একজন। সিম্বলজিস্ট এবং যাকে সিক্রেট হস্তান্তর করা হয় তারা দুজন মিলেই ইতিহাস, ক্রিপ্টোগ্রাফি, এবং আরো নানারকম কোডব্রেকিং মাধ্যমে বিপুল বাধা বিঘ্নের মধ্য দিয়ে পৌঁছতে থাকেন সিক্রেট উদঘাটনের দাড়প্রান্তে। শেষ পর্যন্ত, সেই সত্যটা কী—আর পৃথিবীবাসী কি সেই সত্যটা জানতে পেরেছিলো তারই উত্তর নিহিত আছে দ্য ভিঞ্চি কোড-এ।

শ্বাসরুদ্ধকর ও নাড়িস্পন্দন বাড়িয়ে দেওয়া এ বইটি পড়ে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির ‘দ্য লাস্ট সাপার’, ‘মোনালিসা’ সহ যে শিল্পকর্ম, স্থাপত্যশৈলী, ইতিহাস, দলিল-দস্তাবেজ আর গুপ্ত-ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের বিবরণ পাওয়া যায় তা সত্যিই অতুলনীয়। উপন্যাসটিতে দেখানো সোফি নেভু যীশুর রক্ত ধারনকারী ম্যারি ম্যাগদ্যলিনের প্রতিনিধিস্বরূপ। উপন্যাসে বর্ণিত হলি গ্রেইল সম্পর্কিত লুকায়িত তথ্যাদি যেগুলো প্রায়রি অব সাইওন রক্ষা করে আসছিল সেগুলো হল বাইবেল বর্ণিত মেরি ও যীশুর রহস্য। ২০০৬ সালে বিখ্যাত এ উপন্যাসটির ওপর ভিত্তি করে অস্কার পুরস্কার বিজয়ী রন হাওয়ার্ডের পরিচালনায় মুভি নির্মান করা হয়।

পরিশেষে বলা যায় বইটি নিয়ে অনেক সমালোচনা থাকলেও প্রায়োরি অব সাইওন, ওপাস দ্যই, হলি গ্রেইল, ম্যারি মাগদ্যলিন, ক্রিপ্টোলজি সব মিলিয়ে চমৎকার একটি থ্রিলার ‘দ্য ভিঞ্চি কোড’।

 

The post রহস্যের সন্ধানে ‘দ্য ভিঞ্চি কোড’ appeared first on Bangladesh Study Forum.

মার্কসীয় মতবাদ: বিজ্ঞান ও দর্শনের যোগাযোগ

$
0
0

বিংশ শতাব্দীতে যা বিশ্বে আলোড়ন তুলেছিল তার মধ্যে যেমন বিজ্ঞানের কয়েকটি সূত্র এবং আবিষ্কার ছিল, তেমনি ছিল কিছু মতবাদ। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মার্কসবাদ। বিংশ শতাব্দী থেকে এই একবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত সম্ভবত(!) মার্কসবাদই সবচেয়ে আলোচিত মতবাদ।

মার্কসবাদ নিয়ে লিখবো তার আগে মার্কসবাদ নিয়ে আমার পূর্বের ধারনাটা পরিষ্কার করা জরুরি। মার্কসবাদ বলতে আগে আমি বুঝতাম সমাজতান্ত্রিকতা। অর্থাৎ ধনী গরীব বলে আলাদা কোন শ্রেণি থাকবে না। সবাই সমান সম্পদশালী হবে। কিন্তু মার্কসবাদ নিয়ে একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে একটা ধাক্কা খেতে হবে। অর্থনৈতিক সুষমবণ্টন ছাড়াও মার্কসবাদ প্রকৃত অর্থে দর্শন আর বিজ্ঞানের উপর জোর দিয়েছে।

বিজ্ঞানের ‘থিওরি অফ রিলেটিভিটি’র মতোই জটিল এই এই মার্কস থিওরি। এই জটিলতার কারণেই রাশিয়া থেকে প্রাচ্যে মার্কসীয় দর্শন আসতে আসতে কিছুটা বিকৃত হয়ে গেছে। যার ফলে মার্কসবাদ নিয়ে আমাদের ভ্রান্ত ধারনা তৈরি হয়েছে। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে মার্কস ইতিহাস ও দর্শনের পর্যালোচনা করে ইতিহাসের এক বিশেষ ব্যাখ্যা দাঁড় করান; এবং ইতিহাস ও দর্শনকে চিরপরিবর্তনশীল বিজ্ঞানের পর্যায়ভুক্ত করেন। যেই দৃষ্টিভঙ্গিতে মার্কস এই পর্যালোচনা করেন, সেটা মূলত ‘অর্থনৈতিক’। ইতিহাসের এই অর্থনৈতিক ব্যাখ্যার দ্বারা মার্কস দেখান, যে মানব সমাজ পূর্বে জমিদারি বা সামন্ত প্রথার নিয়ম কানুন অনুযায়ী চলতো, ক্রমশ তা ধনতন্ত্রে পরিণত হয় এবং পরবর্তীতে ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা সাম্যবাদে পরিণত হবে বলে মার্কস বিশ্বাস করতেন। এটাই মূলত ইতিহাসের মার্কসীয় রূপ।

অর্থনৈতিক দিকটা দর্শন ও ইতিহাসের একটি বিশেষ ও প্রধান ভিত্তি। এই অর্থনৈতিক ব্যবধানই একটি সমাজকে আরেকটি সমাজ থেকে আলাদা করে দেয়। তাই বলা যায়, সর্বসাধারনের অর্থনৈতিক উন্নতিই হল সভ্যতার আধার। যে দেশ, যে সমাজ, যে মানুষ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে, সেখানে সাম্য, স্বাধীনতা, সভ্যতা, সংস্কৃতির কথাই উঠতে পারেনা বলে মার্কস মনে করতেন।

মার্কসের সহকর্মী ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস্‌ পল আর্নেস্টকে একটি চিঠিতে লিখেন, “মার্কস দর্শন বলে যে, প্রত্যেক অবস্থার ইতিহাসকে নতুনভাবে বিচার ও বিশ্লেষণ করতে হবে”।

মার্কসই প্রথম প্লেটোর মানববাদকে স্পষ্ট ও প্রত্যক্ষ করে তুলেন। মানুষই যে সমাজের মূল এবং সমাজব্যবস্থার ও সভ্যতার মাপকাঠি- প্লেটোর এই দার্শনিক পর্যালোচনা হল মার্কসের দর্শনের মূল ভিত্তি।

মার্কসবাদ কি?

মার্কসবাদ বলতে সাধারণত বুঝায় যে, এ এক বিশেষ ধরনের রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক সূত্রাবলি। যদিও রাজনীতি ও অর্থনীতি মার্কসবাদের অন্তর্গত, তথাপি এগুলো মার্কসবাদের অংশবিশেষ। তবে মার্কসবাদের একটি বিশেষত্ব আছে। মার্কসবাদ সংকীর্ণ নয়, না তো মার্কসবাদ একটি বদ্ধ আদর্শ, না তো শুধু একটা চিন্তাধারা; বরং মার্কসবাদ একটি বিশেষ প্রণালী। এই প্রণালী মূলত বস্তুতান্ত্রিক দর্শন। তবে মার্কসবাদ বুঝতে হলে দর্শনের সূত্র থেকেই শুরু করা উচিত। তাহলে ‘দর্শন কি’? একেক পণ্ডিতের কাছে দর্শনের একেক রকম সংজ্ঞা পাওয়া যাবে। তবে দর্শনের ইতিহাস ঘাটাঘাটি করলে যে উপসংহারে পৌঁছানো যায় সেটা হচ্ছে, “পরিচিত সংজ্ঞা দিয়ে বিশ্বজগতের বিশ্লেষণই হচ্ছে দর্শন”। প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের দর্শনের ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবাদ। যুক্তি দিয়েই এই অঞ্চলের দার্শনিকরা সময়ের শিকল ভাঙ্গতে চেয়েছেন। তবে দর্শনের শুরুটা মানুষের স্থিতি ও তার সামাজিক পরিবেশের অর্থ নিরূপণের প্রচেষ্টাতেই। দর্শনের অধ্যয়নের সময় এই বিষয়টা খেয়াল রাখতে হবে পাশাপাশি যেন বিজ্ঞানেরও অধ্যয়ন হয়। কেননা, বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ব্যতিরেকে পদার্থিক জগতের পরিবেশ ও তার মধ্যে অবস্থিত সমস্ত কার্যকলাপের পদার্থিক সংজ্ঞা দিয়ে কোন প্রকৃত ব্যাখ্যা দাঁড় করানো সম্ভব নয়, তাই আদিমকালে বিশ্বজগতের বিশ্লেষণের যে রীতি দাঁড়িয়েছিল, সেটা ব্যর্থ হতে বাধ্য।

দর্শনকে সকল জ্ঞানের আধার বা জননী বলা হয়ে থাকে। কিন্তু মনে রাখতে হবে ‘জ্ঞান’ তখনই স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে যখন ‘জ্ঞান’ বিজ্ঞান দ্বারা সিদ্ধ হবে। আরেকটা বিষয়, পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন জ্ঞান দর্শন, যার যাত্রা শুরু হয়েছিল বিজ্ঞানের হাতে হাত রেখে। অর্থাৎ বিজ্ঞান আর দর্শন সমসাময়িক। এদের সহোদরও বলে যেতে পারে।

মনুষ্য স্বভাবের কারণেই মানুষ প্রত্যেকে ঘটনার পেছনে কোন না কোন কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। যতক্ষণ না এই কারণ সে উদঘাটিত করতে পারে, সে ক্ষান্ত হবে না। ঠিক এই কারণেই মানুষ ধর্মের আশ্রয় নেয়, যা প্রমাণ করে মানুষ যুক্তিবাদী। তাই দর্শন ব্যাখ্যার করার সময়ও মানুষ যুক্তিবিদ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকে। এখানেও সেই বিজ্ঞানের জয়জয়কার। যুক্তিবাদী দর্শন একমাত্র বিজ্ঞানের সাহায্যেই বহির্জগতের বিশদ বিবরণ দিতে সক্ষম। আর, দর্শনকে বর্ণনা দিতে গিয়ে যেখানে বিজ্ঞানের সাহায্য পাওয়া যায়নি, সেখানে দার্শনিকরা অতিন্দ্রীয় অনুমান করে দর্শনকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। এই কারণেই কার্ল মার্কসের পূর্ববর্তী দর্শন একটা বিপাকে পড়েছিল। এই বিপাকে পড়ার যে সমূহ কারণ, সেটাও অলৌকিকতার সৌজন্যে। যে সমস্ত রহস্যের সমাধান দর্শন কিংবা বিজ্ঞান করতে পারে নি, সেসব রহস্যের ব্যাখ্যা হিসেবে অলৌকিকতাকে ব্যবহার করে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা হয়েছে। যারপরনাই, একটা সময় পুরাতন অলৌকিকতা থেকে বেড়িয়ে এসে নতুন এক অলৌকিক বিশ্লেষণের প্রয়োজন পড়েছে। এই ঘরনার দার্শনিকদের মধ্যে অন্যতম ইমানুয়েল কান্ট, যাকে আধুনিক দর্শনের জনক বলা হয়।

কিন্তু এই যে অলৌকিকতা, এর পেছনে কারণ কি ছিল? যেহেতু বিজ্ঞান দিয়েই দর্শনের ব্যাখ্যা হয়, তাই বিজ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। আদতে তা নয়। বিজ্ঞান সুপ্রসারিত হওয়া শুরু করে বিংশ শতাব্দীর গোঁড়া থেকে। তাই দর্শনের অনেক তত্ত্বই বিজ্ঞান দ্বারা তাৎক্ষণিক সিদ্ধ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু মূল কারণ হচ্ছে জ্ঞানতত্ত্বের কিছুর মৌলিক সিদ্ধান্তের ত্রুটি। যা কিছু অপ্রয়োজনীয়, তা পরিহার করতে গিয়ে আধুনিক দার্শনিকরা চিন্তাশক্তি এবং মানসিক বিকাশের প্রভাবকে অস্বীকার করেন। এতে করে মানুষের জ্ঞানবর্জন কিভাবে হয় সেটার উত্তর খোঁজাতেই দার্শনিকদের অনুপ্রাণিত করে। আর এর কোন বৈজ্ঞানিক সমাধান না পাওয়ায় অদ্ভুত সব কাল্পনিক মতের সৃষ্টি হতে থাকে।

মার্কস দর্শনের অগ্রদূত হেগেলই প্রথম অলৌকিকতা থেকে বেড়িয়ে এসে বাস্তববাদী চিন্তাধারার উন্নতি ঘটান।

অনেকের মতে, মার্কসবাদী হতে হলে একমাত্র সমাজতান্ত্রিকতা ছাড়া অন্যকোন সমাজ ব্যবস্থায় বিশ্বাস রাখা যাবে না। কিন্তু মার্কস সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা এই জন্যই বলেছিলেন যে, জমিদারি প্রথা থেকে বেড়িয়ে এসে যখন ধনতন্ত্র সমাজব্যবস্থায় কোন রাষ্ট্র উপনীত হতে পারে, সময়ের প্রয়োজনেই সেই ধনতন্ত্র সমাজব্যবস্থা থেকে সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় উপনীত হতে হবে। অর্থাৎ, সময়ের চাহিদায় সমাজব্যবস্থার রূপ পরিবর্তিত হতে পারে।

মার্কসবাদ কোন বিশেষ মতবাদ নয়, তা শুধু সমাজ ও জীবনের বৈজ্ঞানিক যুক্তিপূর্ণ ও পরিবর্তনশীল দৃষ্টিভঙ্গি। আজ যদি কোন কিছুর পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় কিংবা মার্কসবাদের কিছু অংশ কিংবা সম্পূর্ণ মার্কসীয় মতবাদকেই যদি বাদ দিতে হয় তবে তাই করতে হবে। এটাই মার্কসীয় ঐতিহ্য। এই পরিবর্তনশীল বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির উপরই মার্কসবাদ প্রতিষ্ঠিত।

“মার্কসবাদ হল দর্শন ও ইতিহাসের বৈজ্ঞানিক রূপ, যুক্তিবাদ হল তার বনেদ”। যেহেতু বিজ্ঞান পরিবর্তনশীল, তাই মার্কসবাদও পরিবর্তন হতে পারে।

The post মার্কসীয় মতবাদ: বিজ্ঞান ও দর্শনের যোগাযোগ appeared first on Bangladesh Study Forum.

পাঠ সমাচার: নভেম্বর

$
0
0

দিন যায়…..বিভিন্ন ব্যস্ততা বাড়তে থাকে।সাথে ধীরে ধীরে কমতে পুস্তকের সাথে সখ্যতা। এরপরেও মাসশেষে কিছু বইয়ের নাম প্রতিনিয়ত-ই যুক্ত হতে থাকে পঠিত ব ইয়ের তালিকাতে। এমন কিছু বইয়ের বিষয়বস্তু সমম্পর্কে বলার জন্যেই এ পোষ্টের অবতারণা। উল্লেখ্য যে, এখানে যেসব ব ইয়ের সম্পর্কে সংক্ষেপে বলা হয়েছে, সেগুলো বিগত নভেম্বরে পড়া হয়েছে। কথা আর না বাড়িয়ে এবার মূল পোষ্টে আসা যাক!

১) ট্যুইলাইটঃ এ বইটির লেখক মার্কিন সাহিত্যিক স্টেফিন মেয়ার।  পরবর্তীতে বাংলাতে ভাষান্তর করেছেন বশীর বারহান। আলোচিত এ বইটির কাহিনী একটু ভিন্নধর্মী। মূল কাহিনী গড়ে ওঠেছে এক ভ্যাম্পায়ার ও এক মানবীর প্রেমকে কেন্দ্র করে। ঘটনাক্রমে মানবরূপী ভ্যাম্পায়ার এক মানবীকে ভালোবেসে ফেলে। কিন্তু তার গোত্রের অন্যরা এটাকে ইতিবাচকভাবে নেয়না। তারা মানবীর রক্তপানের নেশায় উন্মত্ত হয়ে ওঠে। প্রিয়তম কীভাবে বাঁচাবে তার প্রাণের প্রেয়সীকে? আদৌও কি রক্ষা করতে পারবে তাকে? জানতে হলে পড়তে হবে বহুল আলোচিত এ বইটি! আগাগোড়া রহস্যে ঘেরা এ বইটি পড়তে গিয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হয়। এক কথায় বলতে গেলে, এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলবার মত একটি বই। সবমিলিয়ে দারুণ লেগেছে আমার কাছে। জানিনা, বাকিরা কী বলবেন এ ব্যাপারে!

২) সেঃ এ বইটি লিখেছেন সমসাময়িক কালের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক আনিসুল হক। তার লেখা উপন্যাসগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করলেও বেশ সমালোচিত ব্যক্তিত্বের নাম আনিসুল হক। তার লেখা এ উপন্যাসের চিত্রপট একটু ভিন্নধর্মী। স্মৃতিকাতরতা এটিতে এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। ভালবাসা সবসময় আকাঙ্ক্ষিত হয় না; কখনো কখনো তা এক অনাহূত বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ উপন্যাসেও আমরা একই রকম ঘটতে দেখি। এসব ক্ষেত্রে উভয় সংকটে পড়ে যেতে হয়। কখনো কখনো এসব গল্পগুলি ট্রাজেডিতে মোড় নেয়। সবমিলিয়ে, তেমন খারাপ লাগেনি আমার। লেখার মধ্যে বেশ আকর্ষণ ছিল। একবার শুরু করলে পরে কী ঘটল, তা জানবার জন্যে উদ্বিগ্নতা কাজ করে। আশা করি, পাঠকদের ভালো লাগবে।

৩) পুষ্প, বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণঃ আহমদ ছফা রচিত এটি একটি স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ। মূলত অতীতের বিভিন্ন স্মৃতিচারণ এখানে করেছেন লেখক। সে কাজটি করতে গিয়ে লেখক তার বৃক্ষপ্রেম ও পাখিপ্রেমের দিকটি উপেক্ষা করতে পারেন নি। পাশাপাশি মানব দর্শনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে।  এছাড়াও কৃষিকর্ম বিষয়ক দীর্ঘ আলোচনা আছে এতে। বৃক্ষ ও পক্ষীর সাথে মানবধর্মের তুলনা করা হয়েছে দর্শনের আশ্রয়ে। সবমিলিয়ে, বেশ লেগেছে আমার কাছে। আশা করি, আপনাদের কাছেও ভালো লাগবে।

৪) নাঃ মোহিত কামাল নামে একজন মনোচিকিৎসকের লেখা একটি মনোস্তাত্ত্বিক উপন্যাস এটি। মূলত এটিতে মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণীয় ব্যাপার তুলে ধরা হয়েছে। সেটি হলো, স্থান-কাল-পাত্র ভুলে যে কাউকে, যে কোনো পরিস্থিতিতে না বলতে পারা দৃঢ়তার সঙ্গে। দুঃখজনক হলেও এটা নির্মম সত্য যে, এ গুরুত্বপূর্ণ কাজটি-ই আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই করতে পারি না। এতে করে নিজেরাই ভুল পথে পা বাড়াই। নিজেরাই ক্ষতির স্বীকার হয়ে থাকি। এর জন্যে যে শুধু আমরা নিজেরাই দায়ী থাকি সবসময়, ব্যাপারটা এমন-ও নয়। পারিপার্শ্বিক পরিবেশ-ও সমানভাবেই দায়ী। এ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে এখানে। এর জন্য বাস্তব জীবনের উদাহরণ তুলে ধরেছেন লেখক। সবমিলিয়ে বেশ দারুণ লেগেছে আমার কাছে। আশা করি, বাকি পাঠকদের কাছেও খুব একটা খারাপ লাগবে না।

৫) ভবিষ্যতের বাঙালিঃ এ বইটি লিখেছেন এস. ওয়াজেদ আলি। বিষয়বস্তুর দিক থেকে এটি মূলত একটি প্রবন্ধ সংকলন। বিভিন্ন বিষয় এসব প্রবন্ধে তুলে ধরেছেন প্রবন্ধকার। তবে সবগুলোতেই ঘুরেফিরে কিছু কমন ব্যাপার এসেছে। এসব প্রবন্ধে বাঙালির সাহিত্য, সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। পাশাপাশি এসব ক্ষেত্রে বাঙালির অবনতির চিত্র ও কারণ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সাথে কীভাবে এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব, সেসব ব্যাপার নিয়েও আলোচনা রয়েছে এ বইটিতে। এটার ভাষাশৈলী অনেক ভালো লেগেছে। এছাড়া লিখনভঙ্গীও অনেক চমকপ্রদ। সব মিলিয়ে খারাপ লাগেনি বইটি। আশা করি, আপনার-ও ভালো লাগবে।

৬) কালবেলাঃ জনপ্রিয় এ বইটির লেখক ওপার বাংলার জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক সমরেশ মজুমদার। তাঁর লেখা জনপ্রিয় তিনটি সিরিজ উপন্যাসের মধ্যে এটি অন্যতম। সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিবেশ এটিতে তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি তুলে ধরা হয়েছে নিরবে-নিভৃতে কাজ করে যাওয়া একজন নারীর আত্মগাথা, যে নিজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে শুধু নিজের ভালোবাসার মানুষটার কথা ভেবেছে, আর কিছুই ভাবেনি। এ দিকটা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের আলোচনাকে পরোক্ষভাবে হলেও ছাপিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে বেশ ভালোই লেগেছে আমার কাছে। জানিনা, বাকিদের কেমন লাগবে!

The post পাঠ সমাচার: নভেম্বর appeared first on Bangladesh Study Forum.

ভক্ষণযোগ্য পোকা সমাচার

$
0
0

শুরুর কথা

 মানুষের পোকা খাওয়ার ইতিহাস নতুন নয়। ওল্ড টেস্টামেন্ট এ উল্লেখ আছে জন দ্য ব্যপ্টিস্ট লোকাস্ট জাতীয় ঘাসফড়িং খেয়েছিলেন। বিশ্বের প্রায় ৮০ টি দেশে ১০০০ এর বেশি পোকা খাওয়া হয়। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পোকার চাষ হচ্ছে বিভিন্ন দেশে। সেই সাথে কম খরচে ও কম পরিশ্রমে বেশি আয় করার জন্য পোকা চাষ তরুণদের মাঝেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিশ্বব্যাপী। দেখে নেয়া যাক খাবার হিসেবে কিছু উল্লেখযোগ্য পোকার পরিচিতি।

এগেভ পোকা

এই পোকাটি ম্যাগুয়ে পোকা, টেকুইলা পোকা ইত্যাদি নামেও পরিচিত। মূলত  Hypopta agavis এবং ‍Aegiale hesperiaris নামক মথ (এক ধরনের প্রজাপতি) এর লার্ভাগুলো খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পোকা গুলোকে সাধারণত সেন্ট্রাল মেক্সিকোতে পাওয়া যায়। লার্ভাগুলো যখন পূর্ণবয়স্ক হয়ে যায়, তখন মাংসের মত লাল রং ধারণ করে। খাবার হিসেবে উপযুক্ততা তখনই পায়। মেক্সিকান কুইজিনে খুবই পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু খাবার হিসেবে এ পোকার জনপ্রিয়তা রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম এগেভ পোকায় ৬৫০ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায় যা দুই প্লেট ভাতের সমান। এই পোকা রান্না করে যেমন খাওয়া হয়, কাঁচা খেতেও এর জুড়ি নেই।

ছবি- ভাজা এগেভ পোকা, সূত্র- https://interestingfactsforkids.files.wordpress.com

পিঁপড়া

আমাদের চারপাশে কতরকম পিঁপড়া আছে। এর মধ্যে অনেকগুলো খাওয়াও যায়।

মধুপাত্র পিঁপড়া

শারীরিক কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে এরা তাদের পিঠে খাবার বহন করতে পারে। এ কারণে একে বলা হয় জীবন্ত ভাঁড়ার। আদিবাসী অস্ট্রেলীয়রা তাদের উৎসব পার্বনে এ পিঁপড়া খেয়ে থাকে। ২০১১ সালে বিবিসি এই পিঁপড়া নিয়ে এম্পায়ার অব দ্য ডেজার্ট এন্টস নামে একটি ডকুমেন্টারি প্রচার করে। এতে দেখানো হয় কিভাবে মানুষের খাবারের জন্য নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে মধুপাত্র পিঁপড়ার প্রজাতি বৈচিত্র।

ছবি- মধুপাত্র পিঁপড়া

সূত্র- http://www.strangeanimals.info

পাতাকাটা পিঁপড়া

দক্ষিণ আমেরিকায় বিখ্যাত এ পিঁপড়া। বলা হয়ে থাকে পেস্তাবাদাম আর শূকরের মাংসের মাঝামাঝি স্বাদ এর। কলাম্বিয়াতে  সিনেমা, থিয়েটারে পপকর্নের মত বিক্রয় করা হয়। যদিও চাষীদের জন্য এটি মারাত্নক একটি বালাই।

ছবি- পাতাকাটা পিঁপড়া

সূত্র- https://questionableevolution.com

 বাঁশ পোকা

থাইল্যান্ড, মায়ানমারের জনপ্রিয় খাবার। এরা কাঁচা বাঁশ ছিদ্র করে তার ভেতরে বাস করে। জীবনচক্রের কোন এক সময় সবগুলো লার্ভা একত্রে বাঁশের একটি নির্দিষ্ট খোঁড়লে চলে আসে। তখনই সেগুলোকে সংগ্রহ করা হয়। এদের ওজনের ২৬ শতাংশ প্রোটিন এবং ৫১ শতাংশ স্নেহ পদার্থ দিয়ে তৈরি। ইদানিংকালে বাঁশ পোকার বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়েছে।

ছবি- বাঁশ পোকা

সূত্র- http://lh6.ggpht.com

সিকাডা

একটি ব্যতিক্রমী পোকা যার কোন কোন প্রজাতি মাটির নিচে প্রায় ১৭ বছর জীবিত থাকে। যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে মাটির বাইরে আসে, তখন তাদের দেহ থাকে নরম, রসপূর্ণ। মানুষ এই কচি দেহের স্বাদ নিতে ভুলে না। প্রাচীন গ্রিস, চীনসহ বিভিন্ন জায়গায় এটি খাওয়া হতো। বর্তমানেও চীন, জাপান, থাইল্যান্ড ও মায়ানমারসহ বিভিন্ন দেশে এটি বিখ্যাত খাবার।

ছবি- সিকাডা   সূত্র- https://communitytable.parade.com

সেন্টিপ্যাড বা শতপদী

যদিও সেন্টিপ্যাড খুবই বিষাক্ত এবং তাদের বিষে মানুষ প্যারালাইজড হয়ে যায়, তবুও মানুষের জিহ্বা তাকে থোড়াই কেয়ার করে। চীনের হাটবাজারে বিক্রি হয় এটি খাবার হিসেবে। যদিও এটি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না খারাপ তা নিয়ে এখনো ‍বিতর্ক চলছে।

ছবি- শতপদী পোকা

সূত্র- http://www.followmefoodie.com

তেলাপোকা

ঠিক শোনছেন। তেলাপোকাও খাওয়া হয়। অবশ্য আপনি যেগুলো ডাস্টবিনে দেখছেন ওগুলোর কথা চিন্তা করলে আর খাওয়ার রুচি হবে না। কিন্তু যেগুলোকে আলাদাভাবে চাষ করা হয়, তাজা শাক সবজি ফলমূল খাইয়ে বড় করা হয়, তারা ভক্ষণের উপযুক্ত বৈকি। তেলাপোকা ভেজে, রোস্ট করে, সিদ্ধ করে এমনকি চচ্চরি করে খাওয়া হয়।

ছবি- তেলাপোকা সূত্র- https://edibug.files.wordpress.com

ঘাসফড়িং-
দেখতে সুন্দর খেতে সুস্বাদু এ পোকাটিকে খাওয়া হয় দক্ষিণ মেক্সিকোতে। টর্টিলা নামক এক ধরনের রুটির সাথে চিলি সস দিয়ে পরিবেশন করা হয়। শুধু কি মেক্সিকো! ইন্দোনেশিয়া, চীন, লাতিন আমেরিকার প্রচুর মানুষের খাবারের টেবিলে থাকে এই ঘাসফড়িং। বাইবেলে বর্ণিত আছে ব্যপ্টিস্ট জনও নাকি জঙ্গলে মধু ও একজাতীয় ঘাসফড়িং খেয়েছিলেন।

ছবি- ঘাসফড়িং সূত্র- http://english.vietnamnet.vn

মৌমাছি-
মৌমাছির লার্ভা এক দারুণ খাবার। এই লার্ভা গুলো রয়েল জেলি খেয়ে বড় হয়। চিন্তা করে দেখুন আপনিও রয়েল জেলি খাচ্ছেন যার এক কেজির দাম গড়ে ২২-২৩ হাজার টাকা। মাখনের সাথে মিশিয়ে খাওয়া হয় এই লার্ভা। অবশ্য প্রাপ্ত বয়স্ক মৌমাছিও খাওয়া যায়। বড় মৌমাছি গুলোকে রোস্ট করে এক ধরনের গুঁড়া ময়দা করা হয়। চীনে এই ময়দা দিয়ে গলার ক্ষতের চিকিৎসা করা হয়।

ছবি- মৌমাছির লার্ভা সূত্র- http://i.imgur.com/Acgz4w6.jpg

জুমিলি বা স্টিংক বাগ

ভাবা যায় এই পোকা খাওয়ার জন্য মেক্সিকো তে আলাদা ভাবে উৎসব হয়। স্টিংক বাগের যে প্রজাতিগুলো খাওয়া যায় সেগুলো কে একত্রে জুমিলি বাগ বলে। মোটামুটিভাবে সব উপায়েই একে খাওয়া যায়। তবে এটি সিদ্ধ হতে দেরি হয়, তাই লোকে অনেকসময় কাঁচা জীবিত জুমিলিও খেয়ে ফেলে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি আছে এবং বেদনানাশক হিসেবেও এর সুখ্যাতি রয়েছে। স্বাদ অনেকটা দারচিনির মত।

ছবি- জুমিলি পোকা সূত্র- https://www.chicagoreader.com

মোপেন পোকা
জাম্বিয়া এবং এর আশেপাশের দেশগুলোর মানুষের খুব প্রিয়। মোপেন গাছে থাকে বলে পোকার এই নাম হয়েছে। এর পুষ্টিগুণ কিছু কিছু ক্ষেত্রে গরুর মাংসের চেয়েও বেশি। যেমন গরুর মাংসে আয়রন কন্টেন্ট মাত্র ৬ শতাংশ, কিন্তু মোপেন পোকায় তা ৩১ শতাংশ। তাছাড়া ও পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির পরিমাণও বেশি।

ছবি- মোপেন পোকা সূত্র- https://theculinarylinguist.files.wordpress.com

স্যাগো গ্রাব

বাংলায় একে সাগু পোকাও বলতে পারেন, স্যাগো নামক এক ধরনের তাল জাতীয় গাছে এ পোকা দেখতে পাওয়া যায়। এটি হচ্ছে মূলত পাম উইভিল( এক ধরনের বিটল) এর লার্ভা। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া তে স্যাগো ডেলাইট নামে এই পোকার রেসিপি রয়েছে। কাঁচা খেলে এর স্বাদ ক্রিমের মত আর রান্না করলে শূকরের মাংসের মত। স্নেহ বা চর্বি জাতীয় পদার্থ প্রচুর পরিমাণে থাকে এতে।

ছবি- স্যাগো গ্রাব সূত্র- https://gfb.global.ssl.fastly.net 

শেষ কথা

সামাজিক ভাবে পোকা খাওয়া নিয়ে আমাদের দেশে ট্যাবু প্রচলিত আছে। তবুও খুব সম্প্রতি বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে পোকা চাষের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হতে পারে এই ভক্ষণযোগ্য পোকার চাষ। ভবিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও এর ভূমিকা যথেষ্ট আলোচনার দাবি রাখে।

 

তথ্য সূত্রঃ

১. https://edibug.wordpress.com/list-of-edible-insects/

২. https://en.wikipedia.org/wiki/Entomophagy

লেখক

সাইফুল্লাহ ওমর নাসিফ

The post ভক্ষণযোগ্য পোকা সমাচার appeared first on Bangladesh Study Forum.

মারিও পুজো’র গডফাদার: গড নাকি ফাদার?

$
0
0

“আমি তাকে এমন এক অফার দিবো যে তার কাছে এই অফার গ্রহন করা ছাড়া দ্বিতীয় আর কোন পথ খোলা থাকবেনা”। –গডফাদার ভিটো কর্লিয়নি।

The expression “I am gonna make him an offer he can’t refuse”.

এই একটি লাইন আর একটি সিনেমা একটি সময়কে এতো বেশি প্রভাবিত করেছিল যে সে সময় থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ সেই ডায়লগ এখনও মনে রেখেছে! এই একটি ডায়লগ একটি সিনেমাকে প্রায় কিংবদন্তি সিনেমায় পরিণত করেছে! দর্শকদের ভোটে এই ডায়লগটি সবর্কালের সেরা সিনেমার ডায়লগের তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। ঠিক একইভাবে আরেক জায়গায় গডফাদার ভিটো বলেছে, “কখনও শত্রুকে ঘৃণা করবে না, তাহলে তা তোমার বিচারকে প্রভাবিত করবে”! আসলেই তো, শত্রুকে যদি আমরা আগে থেকেই ঘৃণা করি তাহলে তো আমাদের বিচার এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।

ইতালিয়ানরা প্রায় সময়ই মজা করে বলে এই পৃথিবীতে একজন মানুষের প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকা খুবই কঠিন কাজ, সেজন্য তাদের কে দেখভাল করার জন্য রয়েছে দুই পিতা: এক নিজের পিতা আরেক জন হলো গডফাদার! দুই পিতা একত্রে তাদেরকে রক্ষা করে। একটা ব্যাপার কি জানেন? কোথায় ইতালিয়ানদের সাথে ভারতীয়দের মিল আছে? একটি জায়গায় তারা প্রায় একই রকম! মিলের জায়গাটি আমি বলছি, ইতালিয়ানদের সাথে ভারতীয়দের খানিকটা মিল আছে যে, তারা রাষ্ট্রের থেকে পরিবার কে বেশি ভালোবাসে!

মারিও পুজোর গডফাদার পড়ে আমার মনে হয়েছে এটা কি কোন ঈশ্বরের গল্প নাকি কোন পিতার গল্প অথবা কোন ঈশ্বর পিতার গল্প আসলে কোনটা ?

আসলে কিছু গল্প এরকমই শত বিতর্কের পরেও থেকে যায় হৃদয়ের মাঝে। কিছু গল্পকে মনে হয় এতো কাছের, অন্তরের এতো কাছাকাছি যে একে ছেড়ে যাওয়া যাবে না! ‘গডফাদার’ আমার মনে হয় তেমনিই একটি উপন্যাস! এ উপন্যাসে গডফাদার ভিতোকে এরকমই মনে হয়েছে। আমরা একটা সময় সে গড এর মতোই প্রতাপশালী, কিছুক্ষণ পরেই সে তার সন্তানের জন্য পিতার মতো অসহায়! একটা সময় কিন্ত আপনার মনেও গডফাদারের জন্য সহানুভূতির জন্ম হবে, যখন আপনি শুনবেন গডফাদার ভিতো বলছে, আমি কেন কোন অচেনা আগন্তুক কে ভয় পেতে যাবো? আমার যখন বয়স ষোল তখন থেকেই অচেনা কোন এক আগন্তুক আমার দিকে ছুটে আসে, সব সময় আমাকে এই পৃথিবী থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য!

যারা ক্রাইম ফিকশন থ্রিলার পছন্দ করেন অথবা খানিকটা খোঁজ খবর রাখেন তারা মারিও পুজোর নাম শুনেনি এরকম হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবেনা। মারিও জিয়ানলুইগি পুজো (ইংরেজি: Mario Gianluigi Puzo; একজন ইতালীয়-আমেরিকান কথাসাহিত্যিক ও চিত্রনাট্যকার। এই ইতালিয়ান আমেরিকানের জন্ম ১৯২০ সালের অক্টোবর মাসে। সে মূলত বিখ্যাত তার ক্রাইম ফিকশন লেখার জন্য। তার প্রথম বই ‘গডফাদার (১৯৬৯)’ তাকে এনে দেয় ব্যাপক পরিচিতি। পরে গডফাদার নিয়ে তিন পর্বের সিনেমাও হয়। তার শেষ বই ‘দ্যা ফ্যামিলি’ প্রকাশিত হয় ২০০১ সালে।

গডফাদার নিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্ব সিনেমা হয় যথাক্রমে ১৯৭২ আর ১৯৭৪ সালে। ১৯৭৮ সালের সুপারম্যান ছবির চিত্রনাট্য তিনিই রচনা করেন। উপন্যাসের সময়ব্যপ্তি ১৯৪৫ থেকে ১৯৫৫। ভিটো কর্লিয়নির প্রথম জীবনের স্মৃতিও এর অন্তর্ভুক্ত। ইতালীয় অপরাধ জগতের কিছু শব্দ, যেমন কনসিলিওরি (উপদেষ্টা), ক্যাপোরেজিমি (সহকারী), কসা নসত্রা (সিসিলিয় মাফিয়া), ওমার্তা (নীরবতার নিয়ম) প্রভৃতি এই উপন্যাসের মাধ্যমে ইংরেজিতে পরিচিত হয়। পুজো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন বিমান বাহিনীতে যোগ দেন এবং জার্মানীতে কর্মরত ছিলেন।

পরবর্তীকালে তিনি সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন একটি পত্রিকাতে। মারিও পুজো বেশ এক দরিদ্র পরিবারে জম্মগ্রহন করেন। তার লেখাতে এর প্রভাব পাওয়া যায়। নিউইয়র্ক সিটির কলেজ থেকে পাশ করার পর পুজো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন আমেরিকান আর্মির অফিসার হিসেবে। তার দৃষ্টিশক্তির ক্ষীণতার জন্য তিনি সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহন করতে পারেন না, তার বদলে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয় পাবলিক রিলেশন অফিসার হিসেবে। ১৯৫০ সালে পুজোর প্রথম ছোটগল্প ‘দি লাস্ট ক্রিস্টমাস’ আমেরিকান ভ্যানগার্ড পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

গডফাদার এর গল্পের শুরুতে দেখা যায় নিউইয়র্ক সিটির মাফিয়া বস ভিটো কর্লিয়নি মাদকসম্রাট ভার্জিল সলোৎসোর মাদক ব্যবসার প্রস্তাব নাকচ করে দেন। যার কারণে তাকে আততায়ী দ্বারা হত্যার চেষ্টা করা হয়। ভিটো কর্লিয়নি হত্যাচেষ্টায় বেঁচে গেলেও গভীরভাবে আহত হন। এমতাবস্তায় তার বড় ছেলে সনি পরিবারের দায়িত্বভার গ্রহণ করে। এরমধ্যে ছোট ছেলে মাইকেল ভার্জিল সলোৎসো এবং একজন পুলিশ ক্যাপ্টেনকে হত্যা করে, যার কারণে তাকে আমেরিকা ছেড়ে সিসিলিতে পালিয়ে যেতে হয়। মাইকেল আবার আমেরিকায় ফিরে আসে তার বড় ভাই সনির মৃত্যুর খবর পেয়ে। মাইকেলের প্রত্যাবর্তনের পর ভিটো কর্লিয়নি তাকে পরিবারের সম্পূর্ণ দায়িত্ব তুলে দেন। মাইকেল পরিকল্পনা করে যে সে তার ব্যবসা লাসভেগাসে সরিয়ে নেবে। কিন্তু তার আগে সে অত্যন্ত গোপনে পরিকল্পনা করে পাঁচ পরিবারের কর্ণধারদের হত্যা করে, যারা কর্লিয়নি পরিবারকে নানাভাবে ক্ষতি করায় তৎপর ছিল। এছাড়াও পার্শ্বকাহিনী হিসেবে কর্লিয়নির মেয়ের নির্যাতিত বৈবাহিক জীবন, হলিউডে জনি ফন্টেনের সাফল্য, পারিবারিক ব্যবসায় ভিটোর দ্বিতীয় ছেলে ফ্রেডোর কাহিনি এসেছে। সমাজের ভেতর সমাজ আর রাষ্ট্রের ভেতর রাষ্ট্রের যে জগৎ সেই জগতের শক্তিকেন্দ্রে বসে সবার অলক্ষ্যে কলকাঠি নাড়েন গডফাদার।

বইটাতে যে শুধু ক্রাইম নিয়ে কথা আছে তা নয়, ছোট ছোট অনেকগুলো ব্যাপার এই বইটাতে উঠে এসেছে খুব নিখুঁতভাবে। যেমন, এক জয়গায় ভিটো কর্লিয়নি বলছেন, ‘আমি কোন অসতর্ক পথ বেছে নেই না। অসতর্ক পথ বেছে নেওয়ার অধিকার আছে শুধু নারীদের আর শিশুদের! সত্যিকারের পুরুষদের অসতর্ক পথ বেছে নেওয়া মানায় না’! এরকম আরেক জায়গায় বলা হয়েছে, ‘সত্যিকারের পুরুষ তার পরিবারের সাথে সময় কাটায় যা আমাদের প্রথাগত আইন ভঙ্গকারী গডফাদার মানেই নিষ্ঠুর এরকম ধারণার কত বিপরীত’!

এরকম ছোট কিছু লাইন দিয়ে এই বইতে অনেক বড় ধরনের ফিলোসফির কথা উঠে এসেছে ! যেমন এক জায়গায় ভিটো বলছে একজন আইনজীবী তার বিফ্রকেস দিয়ে অনেক বেশি টাকা ছিনিয়ে নিতে পারে একজন বন্ধুক হাতে নেওয়া লোকের চেয়ে! এটা আমাদের বিচার ব্যবস্থার অসামঞ্জস্যতাকেই প্রকাশ করে! তাই নয় কি?

আরেক জায়গা গডফাদার ভিটো কর্লিয়নির ছেলে মাইকেল কর্লিয়নি বলছে যে, ‘সে তার বাবাকে কখনও মৃত্যুর ব্যাপারে কথা বলতে দেখেনি! ভিতো কলির্য়নি মৃত্যুর ভয় পেতো না! কি অদ্ভুত সাহসী একজন মানুষ যে কীনা সারাক্ষণ জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকে তারপরও সে মৃত্যকে ভয় পায় না’!

আমার কাছে গডফাদার বই এর শেষটা অনেক ভালো লেগেছে। একটা জায়গা তো হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। যখন ভিতো মারা যাচ্ছে মারা যাওয়ার আগে সে বলছে, ‘জীবন সুন্দর, খুব সুন্দর’! একজন গডফাদার যে সারাজীবন জীবন আর মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দোদূল্যমান থেকে কাটিয়ে দিলো সে তার মৃত্যের আগে বলছে ‘জীবন সুন্দর খুব সুন্দর’। সেটা আসলেই একটা ভাবনার বিষয়! যখন জীবনের এতো ভালো দিক দেখার পরও আমরা সব সময় আমাদের জীবন নিয়ে আফসোস করি!

জীবনের গভীরতা একটার পর একটা উঠে এসেছে পুজোর লেখায়। গডফাদার ভিটোর কাছের একজন মারা যাওয়ার সময় ভিটো সেই প্রিয়জনের খুব কাছে ছিল যে মারা যাবে। মারা যাওয়ার আগে সে গডফাদার ভিটো কে বলছে, ‘গডফাদার আমি কি ঈশ্বরের ক্ষমা পাবো? আমি যে এতো পাপ করেছি জীবনে সেসব পাপের ক্ষমা কি কখনো পাবো’! গডফাদার ভিটো কর্লিয়নি আশ্বাস দেন অবশ্যই সে ক্ষমা পাবে ।

‘তাকিয়ে দেখো, তোমার স্ত্রী আর সন্তানেরা একমনে তোমার জন্য প্রার্থনা করছে। এতগুলো মানুষের প্রার্থনা তো বিফলে যেতে পারে না’।

গল্পের আরো কয়েক জায়গায় ঈশ্বরের এর প্রতি এই অবিচল আস্থার প্রমাণ আমরা দেখতে পাই। তাছাড়া এর প্রতিফলন আমরা দেখবো গডফাদারের স্ত্রীর চরিত্রের মাঝেও। জীবনের এতো নিমর্মতা তাকে ঈশ্বরের প্রতি অবিচল বিশ্বাস থেকে সরাতে পারেনা, রোজ তার সকল প্রার্থনায় সে ঈশ্বরকে জপে যায়! উপন্যাসের শেষে এটাও দেখা যায় যে সে মাইকেলের আত্মার শান্তির জন্য তার মাইকেলের স্ত্রী প্রার্থনা করছে যেমন করে ভিতোর জন্য তার স্ত্রী করতো! এরকম করে বংশানুক্রমিক ধারা বছরের পর বছর গডফাদার পরিবারে চলে!

বইটা পড়ার সময় একটা প্রশ্ন আমার প্রতিনিয়ত মনে জাগে মাইকেল কি পারবে তার পিতার মতো পরাক্রমশীল গডফাদার হতে?

এক সময় মাইকেল নিজেই বলে আমার পিতাকে বলে দিও আমি আসলে কিছুই না শুধু তার ছেলে হতে চেয়েছিলাম! মাইকেল একটা সহজ সরল জীবন যাপন করতে চেয়েছিল কিন্ত নিয়তি তাকে নিয়ে মনে হয় অন্য কিছুই পরিকল্পনা করেছিল! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ফেরত একজন মেডেলপ্রাপ্ত হিরো যার নিজের পিতার ব্যবসার প্রতি ছিল চরম অনীহা তাকেই নিয়তির দুর্বিপাকে যোগ দিতে হয়েছে মাফিয়াদের জগতে!

শুধু মাফিয়াদের জগত নয় হৃদয়গ্রাহী ভালোবাসার প্রতিফলনও আমরা পুরো বইটা জুড়ে দেখতে পাই। যেমন, এক জায়গায় মারিও পুজো বলছে: মাইকেলের স্ত্রী হচ্ছে পুরো পৃথিবীতে অদ্বিতীয় মানুষ যে তার ইচ্ছার বাহিরে গিয়ে গডফাদার মাইকেল কে দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে পারে!

কেটি পেরির “Thinking of You ”গানটির কথা মনে আছে –

যখন আপনি একদম পারফেক্ট কোন কিছুর খোঁজ পাবেন তখন আপনার জন্য তুলনা করা বেশ সহজ হয়ে যাবে! মাফিয়াদের নিয়ে অনেক বই লেখা হয়েছে অনেক সিনেমা হয়েছে ভবিষ্যতে আরো হবে কিন্ত যতবার আপনি নতুন কোন গডফাদার কে দেখবেন ততবার আপনার পুরনো গডফাদার এর কথা অবশ্যই মনে পড়ে যাবে, আমার অন্তত তাই মনে হয়! প্রতিবার নতুন এক গডফাদার দেখার সময় আপনার মারিও পুজো’র গডফাদার এর কথা মনে পড়ে যাবে! কারণ মারিও পুজোর গডফাদার থেকেই তো প্রতিনিয়ত আরো গডফাদারের জম্ম হয়ে চলছে! তাই মারিও পুজোর গডফাদারকে নিঃসন্দেহে ক্লাসিক গডফাদার, ‘গডফাদার দের গডফাদার’ হিসেবে অভিহিত আমরা করতেই পারি !

আর হ্যা,

গডফাদার পড়া শেষ হলে গডফাদার সিনেমাটি দেখতে ভুলবেন না যেন! আল পাচিনোর অভিনয় নিশ্চয়ই আপনাকে মুগ্ধ করবে! ১৯৭২ সালে উপন্যাসটি অবলম্বনে দ্য গডফাদার  চলচ্চিত্র তৈরি করা হয়, পরিচালনা করেন ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা এবং অভিনয় করেন ডন ভিটো কর্লিয়নি চরিত্রে মার্লোন ব্রান্ডো ও মাইকেল কর্লিয়নি চরিত্রে আল পাচিনো। মারিও পুজো চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য ও নির্মাণকাজে সাহায্য করেন। চলচ্চিত্রটি সারাবিশ্বে আনুমানিক ২৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে, পাশাপাশি জিতে নেয় অনেক পুরস্কার: তিনটি একাডেমি পুরস্কার, পাঁচটি গোল্ডেন গ্লোব ও একটি গ্র্যামি। চলচ্চিত্র জগতের ইতিহাসেও এটি তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব রাখে। এর সিক্যুয়েল ‘দ্য গডফাদার-পার্ট ২’ পায় ছয়টি অস্কার এবং এটিই প্রথম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য একাডেমি পুরস্কার অর্জন করা সিক্যুয়েল চলচ্চিত্র।

শেষ করছি গডফাদার থেকে আমার খুব প্রিয় একটা উক্তি দিয়ে। আশা করি পাঠক আপনাদের ও ভালো লাগবে :

“এই পৃথিবীতে একটা সময় আসে প্রতিশোধের তখন পৃথিবীর অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী মানুষটিরও সবথেকে শক্তিশালী মানুষটির বিরুদ্ধে সুযোগ আসে প্রতিশোধ নেওয়ার!”

References :

1. “THE GODFATHER (18)”. British Board of Film Classification. May 31, 1996. Retrieved April 15, 2016.

2. “The Godfather (1972)”. Box Office Mojo. Retrieved December 6, 2014.

3. “The Godfather (Re-issue) (1997)”. Box Office Mojo. Retrieved December 20, 2014.

4. “”The Godfather” Turns 40″. CBS News. CBS Interactive Inc. March 15, 2012. Archived from the original on July 17, 2014. Retrieved July 15, 2014.

The post মারিও পুজো’র গডফাদার: গড নাকি ফাদার? appeared first on Bangladesh Study Forum.

সান জু’র ‘দ্য আর্ট অব ওয়ার’ কেন পড়বো

$
0
0

বই  এর  নাম যেহেতু আর্ট ওব ওয়ার তো বুঝতেই পারছেন কাহিনী কি হতে পারে! ইতোমধ্যেই হয়তো এটা ভাবা শুরু করেছেন “যুদ্ধ-বিগ্রহ” নিয়ে লেখা হবে হয়তো। এটা ভেবে থাকলে ঠিকই ধরেছেন। আর কিছু যদি ভাবনাতে না এসে থাকে তবে আমি তো বলতেই এসেছি কাহিনী টা আসলে কি😃

আর্ট অব ওয়ার অনুবাদ করলে ঠিক কি দাড়াচ্ছে বলুন তো?

রণনীতি? যুদ্ধের কলা-কৌশল?

হ্যা ঠিক তাই প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে চীনা সমরবিদ লিখেছিলেন যুদ্ধে বিজয়ী হবার কলা কৌশল। আর সেটিই আর্ট অব ওয়ার।

উল্লেখযোগ্য কিছু নীতি / কলা-কৌশল

১.একজন দক্ষ সেনা নায়ক হলেন রাষ্ট্রের পিলার। কারন তার হাতই রাষ্ট্রের টিকে থাকা নির্ভর করে।

২. যুদ্ধের ময়দানে সেনানায়ককে হতে হবে কৌশলী ও কূটচালে পারদর্শী। সোজা কথা গুটিবাজি করতে হবে! বুঝা গেছে তো?

৩.দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ দক্ষ সেনানায়ক এড়িয়ে চলবে। কেননা ইতিহাস বলে দীর্ঘ সময় ধরে চলা যুদ্ধে রাষ্ট্রের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।

রাশিয়া যখন ১ম বিশ্ব যুদ্ধে জড়িয়ে পরেছিলো তখন অভ্যন্তরীণ রাজনীতির টালমাটাল অবস্থা দেখা দিলো,দ্রব্য মূল্যের দাম বৃদ্ধি পেলো।  রাশিয়া অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলো। আর ঠিক ঐ সময়েই ঘটে যায় ইতিহাসের স্মরণীয় আরেকটি বিপ্লব ‘রুশ বিপ্লব’।

দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ দক্ষ সেনানায়ক এড়িয়ে চলবে। কেননা ইতিহাস বলে দীর্ঘ সময় ধরে চলা যুদ্ধে রাষ্ট্রের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।

৪.শত্রুর পরিকল্পনা সম্পর্কে আগ থেকে জানা। পরিকল্পনা করে হঠাৎ আক্রমন করা।

যেমনটা করেছিলেন বখতিয়ার খিলজী। ১৭ জন সৈন্য নিয়ে বাংলা দখল!

৫. ধ্বংসযজ্ঞ না চালিয়ে শত্রু দেশের পুরোটা দখল করা। উপর্যুক্ত উদাহরনটি এ ক্ষেত্রে ও প্রযোজ্য।

৬.সৈন্যদের কে পুরস্কৃত করতে হবে উদ্দীপনা বাড়ানোর জন্য। যেমনটা করতেন নেপোলিয়ন।

৭. সৈন্য দলের মধ্যে শৃঙ্খলা বজার রাখতে হবে।

‘জীবন মানে যুদ্ধ’ আর যুদ্ধের ময়দানে বীরের মতো যুদ্ধকরার কৌশল আপনাকে জানতেই হবে।

এরকম আরো শতনীতি রয়েছে সানজুর আার্ট অব ওয়ার এ।

দ্য আর্ট অব ওয়ার মূল লেখক: সান জু অনুবাদ : সাবিদিন ইব্রাহিম প্রকাশনী: ঐতিহ্য মূল্য: ১৫০ টাকা

সানজু বলেছেন এ নীতি সমূহ অনুসরণ করলে যুদ্ধে জয় অনিবার্য। আর অনুসরণ না করলে কি হবে বুঝতেই পারছেন ! বলার দরকার নেই।

হাজার বছরের পুরনো এ যুদ্ধনীতি কেনই বা পড়বেন? কি লাভ হবে এটা পড়ে? বুঝতে পারছেন না তো? লাভ-ক্ষতির হিসেব বই পড়ার আগেই কষতে হয়না।

যদিও বইটি পড়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ভাবছিলাম কেন এটা পড়বো?  যুদ্ধের নীতি জেনে আমার কাজ কি? এসব না জেনেও তো দিব্যি ভালো আছি।

না মশাই! আপনাকে এ যুদ্ধনীতিই জানতেই হবে বর্তমান এ কম্পিটিটিভ ওয়ার্ল্ড এ টিকে থাকতে হলে। আপনি জানবেন আপনার নিজের জন্যই।

আচ্ছা জীবন মানে কি?

অনেকেই অনেক কিছু বলবেন জানি।

‘জীবন মানে যুদ্ধ’ আর যুদ্ধের ময়দানে বীরের মতো যুদ্ধকরার কৌশল আপনাকে জানতেই হবে। এই জীবন যুদ্ধে টিকে যেতে পারলেই আপনি বিজয়ী। আপনার জীবনে সফলতা অনিবার্য  সত্য রূপে ধরা দিতে বাধ্য থাকবে। আর যদি না জানেন তবে কি হবে?  আহা!  ব্যর্থতা আর পরাজয়ের গ্লানিতে পর্যবসিত হবে আপনার রঙিন জীবন।

অর্থাৎ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে কৌশলী হওয়া কি বাধ্যতামূলক নয়?

আচ্ছা ধরুন, আপনি – আমি যে সমাজে বাস করছি এখানে কি সকলেই আমাদের শুভাকাঙ্খী? কেউ কি আপনার অনিষ্ট চায়না?  একটু সময় নিয়ে ভাবুন মুখোশের আড়ালে কে আপনার শত্রু আর বন্ধু?

আর শত্রুকে সঠিক উপায়ে কুপোকাত করতে চান তো বা শত্রুর আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চান?

সানজুর  ‘দ্য আর্ট অব ওয়ার’ তো আপনার জন্যই!

শেহনাজ  আখন্দ নীলা

শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

The post সান জু’র ‘দ্য আর্ট অব ওয়ার’ কেন পড়বো appeared first on Bangladesh Study Forum.


কর্ণেল কাদিরের জীবন : মুক্তিযুদ্ধের অজানা অধ্যায়

$
0
0

অভিনব সময় পাঠের অভিজ্ঞতা
ইমরান মাহফুজ

পাক-হানাদার বাহিনী চট্টগ্রামে আমাদের ৭০ পাঁচলাইশের বাসা থেকে বাবা লে. কর্ণেল মুহাম্মদ আব্দুল কাদিরকে ধরে নিয়ে গেলে ১৭ এপ্রিল। তারপর আর খোঁজ নেই! একজন জলজ্যান্ত মানুষ হঠাৎ হারিয়ে গেলেন! তখন বুঝতে পারিনি, এই হারিয়ে যাওয়া মানে আর ফিরে না আসা। তখন বুঝতে পারিনি, এই হারিয়ে যাওয়া মানে শহীদ হওয়া। তখন বুঝতে পারিনি, এই হারিয়ে যাওয়া মানে মাটির নিচে চলে যাওয়া, সমস্ত অস্তিত বিলীন করে দিয়ে।
কথাগুলো একজন সন্তানের কথা মুক্তিযুদ্ধা বাবাকে নিয়ে। সে সন্তান আমাদের পরিচিত সাংবাদিক ও বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার নাদীম কাদের। মুক্তিযুদ্ধা বাবার উপর লিখা বই “মুক্তিযুদ্ধ: অজানা অধ্যায়”। সত্যি অনুসন্ধানী পাঠকের আত্মার খোরাক পুস্তিকাটি। একুশে বইমেলায় জাগৃতি থেকে বের হয়েছে বইটি।

“মুক্তিযুদ্ধ: অজানা অধ্যায়ে’ দেখি যিনি তুখোড় সাংবাদিক হয়েও কোনো ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক ভণিতার আশ্রয় না নিয়ে সোজাসাপটা ভাষায় নাদীম কাদির বর্ণনা করেছেন তার জীবনের অবিচ্ছেদ এক অংশ। ১৯৭১ সালে ঘটে যাওয়া তার এই অংশটি আমাদের জাতীয় জীবনের জন্য জানা খুবই জরুরী। যদিও ঘটনার সময়কালে লেখক খুবই ছোট ছিলেন। কিন্তু সময়ের বুকে পা রেখে সর্বপরি যোগ্য সন্তানের পরিচয় দিয়েছেন নাদীম কাদির; ৩৬বছর পর একজন মুক্তিযুদ্ধাকে নতুন ভাবে জানিয়ে দিয়ে। তিনি আর কেহ নন, শহীদ লে. কর্ণেল কাদির। যিনি ২ জানুয়ারী ১৯২৯সালে রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার মোস্তফাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে আর্মি স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে প্রথম বিভাগে কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। তার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে ¯œাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের আগে উনি একমাত্র বাঙালি যে, ঠরৎমরহরধ, টঝঅ অৎসু ঝপযড়ড়ষ ড়ভ ঊহমরহববৎরহম এ বিশেষ কোর্স করেন। এবং ১৯৭১ সালে তৈল ও গ্যাস উন্নয়ন সংস্থার ঈযরবভ ঈড়হঃৎড়ষষবৎ ড়ভ ঙঢ়বৎধঃরড়হং ছিলেন।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিলে কী হয়েছিল প্রাণপ্রিয় কর্ণেল মুহম্মদ আব্দুল কাদিরের জীবনের? জেনে নেই মুক্তিযুদ্ধা বাবার সন্তান নাদীম কাদিরের বই থেকেÑ
৮ মার্চ ১৯৭১। রেডিও পাকিস্তানে বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ পুনঃপ্রচার। সবাই রেডিওর ভাষণ শুনছে। বাবার অর্ডারে সবাই চুপ!
ভাষণ শেষ হতেই বাবা, “জয় বাংলা, জয় বাংলা” বলে চেঁচিয়ে উঠলেন। মা তাকে চুপ থাকতে বললেন। মা হুঁশিয়ার করে বলে, “তুমি সেনা অফিসার, কেউ শুনলে বিপদ হবে।” তবে বাবা নিশ্চিত, ‘বাংলাদেশ’ হবেই। আমরা বাংলাদেশের বড় বড় পতাকা ও কালো পতাকা আমাদের বাসার সামনে উড়িয়ে দিলাম। আর অফিসে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম সাহেবসহ অনেককে নিয়ে বাবা বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করলেন।
বিহারীদের চোখে পড়ল বিষয়টা। আর ওরা নানানভাবে হুমকি দিতে শুরু করলো বাবাকে। যখন পরিস্থিতি উত্তেজনাকর তখন একদিন বাবা পাড়ার বাঙালিদের বললেন, ওদের জিনিস যেন কেউ না কেনে। চলে যাক ওরা পাকিস্তানে। আমাদের পাঁচলাইশের বাসার পাশেই দুইটা বিহারি পরিবার ছিল। যারা সব বিক্রি করে তড়িঘড়ি করে পাকিস্তান চলে গেল। এর মধ্যে বাবা ক্যাপ্টেন রফিক ও অন্যান্যদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেন।
২১ বা ২২ মার্চ, ১৯৭১, মেজর (পরে রাষ্টপতি) জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া আমাদের বাড়িতে আসেন। সামনে কি হতে যাচ্ছে তা নিয়ে তাদের মধ্যে আলাপ হয়। এই ব্যাপারে পরে মায়ের কাছ থেকে জানলাম। তবে মনে আছে, বাবা আর মেজর বৈঠকখানায় এবং মা ও বেগম জিয়ার কোনো বিষয়ে বাক-বিতন্ডা হয়, যা বাইরে থেকে শোনা যাচ্ছিল। এর পর পাক বাহিনীর আগমন ২৫ মার্চ ঢাকায় এবং ২৬ মার্চ চট্টগ্রামে।
…………………..
পরদিন সকালে জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখলাম বিহারীরা বড় বড় রামদা আর তলোয়ার নিয়ে বাঙালিদের মারছে। প্রবর্তক সঙ্ঘে গুলির শব্দ আর সাদা কাপড়ে মোড়ানো দেহগুলো গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ছে। ভয়ে জানটা শুকিয়ে গেল! বাবা খুব চিন্তিত! তখনো আমি বুঝে উঠতে পারিনি যে, আমাদেরও যে কোনো সময় মেরে ফেলতে পারে। তবে এত বছর পর পেছনে তাকিয়ে যখন দেখি, তখন মনে হয় আমাদের সবাইকে বাবার সাথে মেরে ফেললেই ভালো হতো! বাবাকে মাঝখানে কয়েকদিন পাইনি। মা বলতো কাজে গেছে। হঠাৎ একদিন দেখি বাবা! মুখে দাড়ি এবং ভীষণ ক্লান্ত চেহারা। বাবাকে জিজ্ঞাসা করলাম, সে কোথায় গিয়েছিল? বললো, কাজে। “তুমি চিন্তা করো না, পাপা আছে”- এই বলে আমাকে আশ্বস্ত করল।
তারপর এক ভোরে ১৪ বা ১৫এপ্রিল ১৯৭১ ঘুমভেঙে দেখি শুধু লুঙ্গি- গেঞ্জি পরে আর গামছা নিয়ে বাবা বের হয়ে যাচ্ছে। “পাপা কই যাও?” আমি জিজ্ঞাসা করতেই, বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,“তুমি ঘুমাও বাবা। পাপা এখানেই আছে।” ক্যাপ্টেন রফিক এবং এম আর সিদ্দিকী গাড়ি পাঠাবেন আমাদের নিয়ে যেতে- এমন একটি আশা ছিল বাবার। এমন কথাও হয়েছিল। কিন্তু আসলেই আমরা তা বুঝতে পারিনি, বা জানতে পারিনি গাড়িটা এসেছিলো কি না?
তারপর এলো সেই ভয়াবহ ১৭ এপ্রিল ১৯৭১!
আমরা নাস্তা করছি আমাদের চট্টগ্রামের ৭০ পাঁচলাইশের বাসায়। পাপা নাস্তা শেষ করে তার ঘরে গেছে। হঠাৎ বাসার সামনে কুকুরগুলো চিৎকার আর ছোটাছুটি করছিল। আমাদের দুটো কুকুর ছিলো। যেগুলো প্লেনে করে আমাদের সাথে পাকিস্তান থেকে আসে।
দরজায় বুটের লাথি। ভয়ংকর! আমার মা আর রুবিনা বাবার শোয়ার ঘরে। আমি বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম, দরজা খুলব কি না? উনি বললেন, “খুলে দাও বাবা।”
বাসায় ছিল বাবুর্চি মান্নান আর ব্যাটম্যান সিপাহী গনি মিয়া। অন্য স্টাফদের বাবা বিদায় করে দিয়েছিলেন। ওরা দুজন রান্নাঘরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে।
আমি দরজা খুলতেই পাক- সেনা বাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন ১০-১২ জন সিপাহীসহ ঢুকেই আমাকে উর্দুতে জিজ্ঞাসা করল, “আব্বু কাহা হে?”(বাবা কোথায়?)
আমি বললাম, “ বেডরুম হ্যা।” “চালো।” আমার পেছন পেছন ওরা বেডরুমে ঢুকলো। সময় হবে সকাল ৯:০০ টা।
এখন মনে পড়লে আমার অবাক লাগে,এমন ভয়াবহ সময়েও সে এতো নির্বিকার ছিল। উর্দু ভাষায় সেই ক্যাপ্টেন কললো যে, আমার বাবা ‘গাদ্দার’ অর্থাৎ দেশদ্রোহী। এবং এখন যুদ্ধ চলছে। তাই সিনিয়ার অফিসার হলেও সে বাবাকে কোনো সম্মান জানাতে পারছে না। ক্যাপ্টেন ভাবাকে হুকুম করল, “তৈরি হয়ে নাও। আমাদের সাথে মার্শাল-ল হেড-কোয়ার্টারে তোমাকে যেতে হবে। পরিবারকে কিছু বলার থাকলে বলে নাও।”
বাবা মাকে বললেন, “নিজের ও বাচ্চাদের খেয়াল রেখো।”
তৈরি হয়ে বাবা ওদেরকে বলল, “চালো।” বাবার পিছন ও দুই পাশে তিন সৈনিক বন্দুক তাক করে তাকে তাকে নৌ-বাহিনীর একটি নীল জীপে উঠালেন। সবাই স্থির! আমি দৌড় দিয়ে দোতলায় উঠছি। কাচের জানালা দিয়ে বাবার দিকে তাকালাম। হাত উঠিয়ে বিদায় নিলেন তিনি। তখনও ভাবিনি এই হবে শেষ দেখা।

এই দৃশ্য যে কত কষ্টের হতে পারে তা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। এই কষ্ট নিয়ে লেখক, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর হঠাৎ ২০০৭-এর শেষে একটি সূত্রে দেহাবশেষের খোঁজ পায় চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে। বুক ফাটা বেদনায় ওই মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়ার অবস্থা একজন সন্তানের। কারণ, ওই মাটিতেই তো আছে তার প্রাণপ্রিয় বাবা; আমাদের গর্ব কর্ণেল কাদির। ওই মাটিতে মিশে গেলেও বাবার কাছে গিয়েছে সন্তান! ধরতে পেরেছে অদৃশ্য হাত।
হ্যা নাদীম কাদির তাঁর বাবার হাতটি ধরেছে। অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে নিয়েছেন নাটরে। মহান শহীদের নামানুসারে রাখা নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসে। তার প্রতি আমাদের সশস্ত্র সালাম। উল্লেখ্য: বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ছাড়া আর কারো দেহাবশেষ স্থানান্তর করা হয়নি। বাংলাদেশে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান প্রথমে এবং পরে হচ্ছে কর্ণেল কাদির।

বইটিতে প্রসঙ্গক্রমে জানতে পারিÑ শেখ মুজিবুর রহমানের অসাধারণ জীবনের কথা। তার সাথে লেখকের দেখা এবং আদর করে টাকা হাতে দিয়ে পিতৃসুলভ মায়ায় সিক্ত হওয়ার সময়ের বয়ান। এবং স্বাধীনতার ঘোষনার সূত্রপাত। এই প্রসঙ্গে এখানে একটি জীবন্ত সাক্ষীর বক্তব্য লেখক তার বইয়ে নিয়েছেন। যার নাম: মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, এমপি। যিনি মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে কর্ণেল কাদিরের সবচেয়ে ¯েœহের ও ঘনিষ্ঠ ছিলেন । তার একটি বক্তব্য উল্লেখ করার মতোÑ ‘কর্ণেল কাদির যদি সময় মতো বের হতে পারতেন তবে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা উনি পাঠ করতেন। উনি না আসতে পারায় তখন মেজর জিয়াকে দিয়ে ঘোষণা পাঠ করানো হয়। মেজর জিয়া থেকে সিনিয়র ছিলেন কর্ণেল কাদির। এদিকে পাক সেনারা বিষ্ফোরক পাচারের কথা জানতে পেরে তাকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়’।
সবশেষে বলি সহজ ভাষায় লিখা “মুক্তিযুদ্ধ: অজানা অধ্যায়’’ এই বইট মুক্তিযুদ্ধ গবেষকসহ অনুসন্ধানী পাঠকের কাজে লাগবে। সুপাঠ্য গ্রন্থটি সংগ্রহযোগ্য।

লেখক: নাদীম কাদির। প্রকাশক: জাগৃতি। প্রচ্ছদ: আড়াই রুকা। দাম: ১৮০ টাকা।

The post কর্ণেল কাদিরের জীবন : মুক্তিযুদ্ধের অজানা অধ্যায় appeared first on Bangladesh Study Forum.

তাজউদ্দীন আহমদ নেতা ও পিতা: শারমিন আহমদ

$
0
0

প্রথমেই যে কথাটি বলবো তা হলো “একটি জাতির জন্ম ও তার রাজনৈতিক ইতিহাস জানবার জন্য প্রয়োজন উন্মুক্ত মানসিকতা ও সত্যকে জানবার আগ্রহ ও অঙ্গীকার”। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, “ইতিহাস দেশের গৌরব ঘোষনার জন্য নহে,সত্য প্রকাশের জন্য”। বর্তমান সময়ে স্বাধীনতার ৪৬ বছর হয়ে গেলেও আমরা যারা নতুন প্রজন্মের তারা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, আমরা অনেকেই জানিনা এক সাগর রক্তের বিনিময়ে কারা বাংলাদেশের জন্য স্বাধীনতা এনেছিলো। আজকে এমন এক নেতার নাম বলবো যাকে নিয়ে ঘটা করে কোন কথাবার্তা বলা হয়না। তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন তাজউদ্দীন আহমদ। শেখ মুজিবুর রহমান ও তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন একে অপরের পরিপূরক। পূর্ব বাংলার স্বাধীনতার আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে মুজিব-তাজউদ্দীন শলা-পরামর্শ করতেন। তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক। তার উদাহরণ আমি কয়েকটি ঘটনার বিবরন দিয়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করবো।

অপারেশন সার্চ লাইটের নীল নকশা সম্পন্ন করে ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় ইয়াহিয়া খান গোপনে ঢাকা ত্যাগ করলেন। সেই রাতে তাজউদ্দীন আহমদ গেলেন শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে দেখা করতে। তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু ছিলো আন্ডারগ্রাউন্ডে যেয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা। তবে শেষ সময়ে এসে শেখ মুজিবুর রহমান বেঁকে বসলেন; তিনি কোথাও যাবেন না বলে জানালেন। তাজউদ্দীন আহমেদ বললেন

“মুজিব ভাই, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হলেন আপনি। আপনার নেতৃত্বের ওপরই তারা সম্পূর্ণ ভরসা করে রয়েছে। আপনার অবর্তমানে দ্বিতীয় কে নেতৃত্ব দেবে এমন ঘোষনা তো আপনি দিয়ে যাননি; নেতার অনুপুস্থিতিতে দ্বিতীয় ব্যক্তি কে হবে, দলকে তো তা জানানো হয়নি। ফলে ২য় কারো নেতৃত্ব দূরূহ হবে এবং মুক্তিযুদ্ধকে এক অনিশ্চিত ও জটিল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়া হবে”

তাজউদ্দীন আহমদের সেদিনের উক্তিটি ছিলো এক নির্মম সত্য ভবিষ্যদ্বাণী। তাজউদ্দীন আহমদ আরোও বললেন যে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ্য হলো পূর্ব বাংলাকে সম্পূর্ণ রূপে নেতৃত্বশূন্য করে দেয়া। শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে আটক হলেন। আর পূর্ব পাকিস্তানে ইতিহাসের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ। আপনারা সকলেই সে ঘটনা কম বেশি জানেন। আজকের এই লেখার বিষয়বস্তু হলো তাজউদ্দীন আহমেদ কেন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম।

১৯৭১, ৩০ মার্চ পশ্চিম পাকিস্তানীদের বর্বরতা চলছে। আর সেই সময়ে তাজউদ্দীন আহমদ গ্রহণ করেন এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, একটি স্বাধীন সরকার প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম পরিচালনা করা । বাংলাদেশের ভাগ্যাকাশে স্বাধীনতার সূর্যোদয় হবে বলেই তাজউদ্দীন আহমেদ এর কাছে ন্যস্ত হলো মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বভার। ১০ এপ্রিল, ১৯৭১ তাজউদ্দীন আহমদ বেতার ভাষণে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়ে জাতীয় ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেন। সরকার গঠনের সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলো ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথ তলার আম্রকাননে। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বর্বরতার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের অকুতোভয় সংগ্রাম এবং বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি করে স্বাধীন বাংলা সরকার সরকার গঠনের কথা। তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন- “পলাশীর এক আম্রকাননে বাংলা ও ভারতের স্বাধীনতার সূর্যাস্ত হয় ইংরেজদের হাতে, অপর এক আম্রকাননে উদিত হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য”

তবে সেই সময়েও থেমে থাকেনি স্বাধীনতাবিরোধী কার্যকলাপ। খন্দকার মোশতাক অস্থায়ী সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কৌশলে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন পাকিস্তান ও মার্কিন সরকারে স্বার্থ রক্ষার কাজে। মুক্তি সংগ্রামকে ধ্বংস করে কনফেডারেশন গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে পুনরায় পাকিস্তানের উপনিবেশে পরিণত করার জন্য তিনি সু-চতুর চাল চালেন। একই সময়ে বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বে যুবনেতারা মুজিবনগর/স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে। তারা বিপ্লবী কাউন্সিল গঠনের পক্ষে জোর দেয়। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ (Research & Analytical Wing) এর সহয়তায় শেখ মনির নেতৃত্বে গঠিত হয় মুজিব বাহিনী। তবে তাজউদ্দীন আহমদ এ সব কিছুই যেন বানচাল করে দেন তার তড়িৎ দৃঢ় পদক্ষেপের মাধ্যমে।

তাজউদ্দীন আহমেদ বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন জনের মতামত নেন। আলোচনার মাধ্যমে কোন্দলকারী ও অনাস্থা প্রদর্শনকারী দলটি ব্যতীত অধিকাংশ সকলের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, আইনগত সরকার প্রতিষ্ঠা ব্যতীত ভারত সরকারে কাছ থেকে অস্ত্রগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা পরিচিত হবে সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে। সমগ্র জাতির মুক্তি ও কল্যাণের লক্ষ্যে তাজউদ্দীনের নিবেদিত কর্মপ্রয়াসের বিপরীতে অনুগত তরুণদের ক্ষুদ্র অংশ নিয়ে গঠিত মুজিব বাহিনীর প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিলো। তাজউদ্দীন আহমেদের সুদক্ষ নেতৃত্বে একটি বড় অর্জন হলো স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের ভারতের কাছ থেকে স্বীকৃতি লাভ। তাজউদ্দীন আহমদ বলেন, বাংলাদেশ কারো ঘাঁটি হবেনা। আর সেইদিন কোন গোপন চুক্তি হয়নি। সেই চুক্তি ছিলো প্রকাশ্য এবং কিছুটা লিখিত, কিছুটা অলিখিত। সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও তাজউদ্দীন আহমদ এতে যুক্ত ভাবে স্বাক্ষর করেছিলো। সেখানে লেখা ছিলো, “আমাদের স্বীকৃতি দিয়ে সাপোর্টিং ফোর্স হিসেবে ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশে প্রবেশ করবে ও মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করবে। এবং যেদিন আমরা মনে করবো আমাদের দেশে ভারতীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই সেদিন ভারতীয় বাহিনী চলে যাবে”। আর পরবর্তীতে সেই চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতেই স্বাধীনতা উত্তর কালে বঙ্গবন্ধু ইন্দিরা গান্ধীকে বলেন, ৩০ মার্চ, ১৯৭২ এর মধ্যেই তোমারা তোমাদের বাহিনী উঠিয়ে নিয়ে যাবে, তখনই মিসেস গান্ধী ১৯৭২, ১৫ মার্চ মধ্যে সহায়ক বাহিনী উঠিয়ে নিয়ে গেলেন 

দালাল ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে তাজউদ্দীন আহমদের পদক্ষেপ ছিলো লক্ষণীয়। ১৯৭১, ১০ ডিসেম্বর তাঁর নেতৃত্বে যে সকল সরকারি কর্মচারী ও কর্মকর্তারা যুদ্ধাপরাধ করেছেন তাদের বিচারের অধীন আনার বিষয়টি গৃহীত হয়। তিনি জানতেন স্বাধীনতা -উত্তর কালে বাংলাদেশে এই বিষবৃক্ষদের সমূলে উৎপাটিত না করলে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যমুক্ত ও সবল সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব নয়।

১৬ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে সূচিত হলো শতাব্দীর এক ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান। তাজউদ্দীন আহমদ দেশে ফিরে যা বলেছিলেন তা বৈপ্লবিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন ও আহ্বান! তিনি বললেন-

শহীদের রক্তে বাংলাদেশের সবুজ মাটি লাল হয়েছে। শহীদের রক্তে উর্বর মাটিতে উৎপন্ন ফসল ভোগ করবে গরিব চাষি, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ। কোন শোষক জালেম ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি বাংলাদেশকে শোষণ করতে পারবেনা। যারা প্রশাসনিক কাজে নিয়োজিত রয়েছেন তাঁদের প্রত্যেককেই বৈপ্লবিক চেতনা নিয়ে কাজ করে যেতে হবে ও পুরনো দৃষ্টিভঙ্গি ত্যাগ করে সাম্যবাদী অর্থনীতি গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ কায়েম করা যখন সম্ভব হবে তখনই বিপ্লব সম্পন্ন হবে।

 

শেহনাজ  আখন্দ নীলা

শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

The post তাজউদ্দীন আহমদ নেতা ও পিতা: শারমিন আহমদ appeared first on Bangladesh Study Forum.

নয়া সড়ক: খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন-এর একখণ্ড পরিচয়

$
0
0

বই: নয়া সড়ক( উপন্যাস)

লেখক: খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন

প্রকাশক: পাকিস্তান পাব্লিকেশন ,১৯৮- কাকরাইল, ঢাকা-২

প্রকাশ: ১৯৬৭

হ্যাঁ, লেখকের নাম দেখে যার কথা ভাবছেন ইনি তিনিই। সবার শৈশবের প্রিয় ছড়া ঐ দেখা যায় তালগাছা এর লেখক। কিছু পুরানো বই এর সাথে কাগজের দোকানে  পেয়ে গেলাম ‘নয়া সড়ক’ উপন্যাসটি । আর লোভ সামলানো কঠিন হল তার সম্পর্কে কিছু না লিখে থাকা। ঐ দেখা যায় তালগাছ আমরা শিশু বয়সে সব্বাই পড়ি, কিন্তু এর লেখক সম্পর্কে কিছু জানিনা। কে এই ‘খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন’—তাই বেশ কিছুদিন থেকে তার বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছিলাম। গ্রাম পাঠাগার এর সংগঠক বাবু ভাই শুধু জানিয়েছিলেন তার জন্ম স্থান  মানিকগঞ্জ। আর তার চাচার শশুর বাড়ি কবির এলাকায়। তিনি তার চাচাকে বলে কবি সম্পর্কে কিছু তথ্য দেবার ব্যবস্থা করবেন। আর তার কাছেই কবির লিখিত একটি বই সম্পর্কে শুনি আর তা হল কবি নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্যকর্মের উপর স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ ‘যুগস্রষ্টা নজরুল’। এরপর মানিকগঞ্জ এর কিছু সাহিত্য সংগঠক এর সাথে আমার কথা হয়। তারা আমাকে কিছু তথ্য দিতে চান। তাদের কাছে জানতে পারি তার মেয়ে পুরান ঢাকায় একটা পত্রিকা চালান।

খুব আশ্চর্য হই; যার কবিতা আমাদের বাংলাদেশের ১০০% শিশু তাদের শৈশবে পড়ে, আবৃত্তি করে, সেই লেখক সম্পর্কে আমরা কেন কিছু জানি না! সেই আগ্রহ কিছুটা স্থিমিত হয়েছিল, কিন্তু মনের কোনে ছিল একটু বাতি।

আসুন জেনে নিই এই প্রিয় কবির কিছু প্রিয় বিষয় সম্পর্কে।

খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন(১৯০১-১৯৮১):

জন্ম চারিগ্রাম,  মানিকগঞ্জ, ৩০শে অক্টোবর ১৯০১ । সাহিত্যিক। স্থানীয় পাঠশালায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে পাঠকালে মাতার ও পঞ্চম শ্রেণীতে পাঠকালে পিতার পরলোকগমন। চরম দারিদ্রে নিপতিত হয়ে ভাগ্যান্বেষণে কলকাতায় গমন ও বই বাঁধাইয়ের কাজ গ্রহণ। কলকাতায় একটি নাইট স্কুলে কিছুকাল অধ্যয়ন। অতঃপর কলকাতা কর্পোরেশন স্কুলে শিক্ষকতায় যোগদান ও সাহিত্যসাধনায় আত্মনিয়োগ।

১৯২৩-এ সাপ্তাহিক ‘মুসলিম জগৎ’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নিযুক্ত। এ পত্রিকায় বিদ্রোহ শীর্ষক সম্পাদকীয় প্রকাশের দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত। হুগলী জেলে কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে একই কামরায় বাস । এ সময়ে উভয়ের মধ্যে অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব স্থাপিত। পাকিস্তান সৃষ্টির (১৪ আগষ্ট, ১৯৪৭) পর কলকাতা ছেড়ে ঢাকায় আগমন। ঢাকার বাংলাবাজারে পুস্তক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘আলহামরা লাইব্রেরি’ প্রতিষ্ঠা (১৯৪৮)। পাকিস্তানের অস্তিত্ব ও এর আদর্শের প্রতি অত্যুৎসাহী মনোভাব প্রকাশ। পূর্ববঙ্গ সরকার কর্তৃক গঠিত ভাষা কমিটির (১৯৪৯) সদস্য হিসেবে তৎকর্তৃক বাংলা ভাষার অনৈসলামিক অনুষঙ্গ দূর করার সুপারিশ। রবীন্দ্র সাহিত্য পাকিস্তানের তাহযিব-তমদ্দুনের পরিপন্থী—এ বক্তব্য উপস্থাপন করে ১৯৬১তে পূর্ব বাংলায় রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী পালনের বিরোধিতা করে বক্তৃতা-বিবৃতি প্রদান । ১৯৬৭তে পাকিস্তান সরকার রেডিও ও টেলিভিশন থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলে তার প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন।

সাহিত্য:

কবি নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্যকর্মের উপর স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ ‘যুগস্রষ্টা নজরুল’ (১৯৫৭) রচনা করে খ্যাতি অর্জন।

প্রকাশিত গ্রন্থাবলি:

শিশুতোষ গ্রন্থ-মুসলিম বীরাঙ্গনা (১৯৩৬), আমাদের নবী (১৯৪১), খোলাফায়ে রাশেদিন (১৯৫১), সোনার পাকিস্তান (১৯৫৩), বাবা আদম (১৯৫৭), আরব্য রজনী (১৯৫৭), স্বপন দেখি (১৯৫৯), শাপলা শালুক (১৯৬২)।

কাব্য:

পালের নাও (১৯৫৬), আর্তনাদ (১৯৫৮), হে মানুষ (১৯৫৮)।

উপন্যাস:

অনাথিনী (১৯২৬), নয়া সড়ক (১৯৬৭)।

গল্পগ্রন্থ:

ঝুমকোলত (১৯৫৬)।

শিশু-সাহিত্য রচনায় কৃতিত্ব প্রদর্শন। তার প্রত্যেকটি রচনা ভাবে ও ভাষায় সমৃদ্ধ। সরল ও প্রাণস্পশী ভাষায় তার শিশুতোষ গ্রন্থের কাহিনিগুলো বর্ণিত। হে মানুষ’ তার শ্রেষ্ঠ কবিতাগ্রন্থ। এতে মানুষের জয়গান সাবলীল পদ্যে বাণীমণ্ডিত।

পুরস্কার:

‘যুগস্রষ্টা নজরুল’ গ্রন্থের জন্য ইউনেস্কো পুরস্কার (১৯৬০), শিশুসাহিত্য বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬০) ও একুশের পদক (১৯৭৮) লাভ।

মৃত্যু, ঢাকায় ১৬.২.১৯৮১৷

সূত্র: খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন জীবনী ও সাহিত্য- ইসলামি ফাউন্ডেশান

নয়া সড়ক:

১৯৬৭ সালে ১১ অক্টোবর ‘নয়া সড়ক’ উপন্যাসের প্রথম সংস্করণ প্রকাশ হয়েছে। তখন কবি খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীনের বয়স ৬৬ বছর। বলা যায় যে, প্রায় পরিণত বয়সেরই ফসল হলো এই উপন্যাস। ‘নয়া সড়ক’ সম্পর্কে তিনিও স্বীকার করেছেন যে, “এর আগের উপন্যাস ‘অনাথিনী’। উহা সুধীজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। ‘অনাথিনী’র ভাষা আর ‘নয়া সড়ক’-এর ভাষায় বিরাট পার্থক্য। ‘অনাথিনী’ প্রথম জীবনের অপরিপক্ক চিন্তা ও মনের প্রকাশ। ‘নয়া সড়ক’ প্রকাশের সময় দেশের বদল হয়েছে, মনের বদল হয়েছে, ভাষায় ধরেছে আধুনিকতার রং। চিন্তার প্রসারতারও বৃদ্ধি পেয়েছে।” অর্থাৎ ১৩৩৩ সনে প্রথম উপন্যাস ‘অনাথিনী’ প্রকাশ পায়। এরপর তিনি দীর্ঘ সময় অন্য কোন উপন্যাস রচনায় হাত দেন নি; যদিও এ সময় তিনি সাহিত্যের অন্য শাখায় নিজেকে ব্যাপৃত রেখেছিলেন। কিন্তু উপন্যাসের রসদ সংগ্রহ দীর্ঘসময় ধরে যে সংগৃহীত হচ্ছিল তা কষ্টকল্পনা নয় বিন্দুমাত্রও। প্রথম উপন্যাসের প্রায় ৪১ বছর পর মঈনুদ্দীনের দ্বিতীয়, এবং সম্ভবত সর্বশেষ উপন্যাস ‘নয়া সড়ক’ প্রকাশ। মজার ব্যাপার হলো, তার প্রায় ২০ বছর পর, অর্থাৎ কবির চার কুড়ি-পাঁচ জন্মবার্ষিকীতে ‘নয়া সড়ক’ প্রসঙ্গে আমার বিবেচনা প্রকাশ করছি। আজকাল বাজারে কবির সকল সাহিত্যকর্মের মতই নয়া সড়ক উপন্যাসখানিও দুষ্প্রাপ্য। এই দুপ্রাপ্যতার কারণ নিশ্চিতই সর্বজন বোধগম্য ।

যদিও ‘নয়া সড়ক’-এর প্রকাশ ষাটের দশকে, তবু মনে হয় এ উপন্যাসের রচনাকাল পঞ্চাশের দশকেই সমাপ্ত হয়েছে। অন্তত এর পটভূমি তা-ই প্রমাণ বহন করে। আর. এ সময়টিতেই কবি মঈনুদ্দীন একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষের আস্বাদলাভে ধন্য। তিনি তখন আলহামরা লাইব্রেরীর কর্ণধার। অনেক গ্রন্থের প্রণেতা। ছেলেমেয়ে, নাতনাতনী নিয়ে ভরভরতি সংসারের সুখীমানুষ, কবি তাই দেশের অন্য দশটি মানুষের এমনকি আপামর জনতার সুখচিন্তায় বিভোর। তাই, তিনি ‘নয়া সড়ক’ উপন্যাসের পটপরিকল্পনা যেভাবে বাস্তবায়িত করার এক মহান মানবীয় তাগিদ অনুভব করতে থাকেন বলেই মনে হওয়া স্বাভাবিক। কারণ, কেবল নিজের সুখে মশগুল থাকার মানুষ সমাজে কোনকালেই অভাব হয় নি, তবু চির নজরুলসখা খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন সুখ ও শান্তি দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য সমানভাবেই কামনা করতে থাকেন।

‘নয়া সড়ক’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র যথা প্রাণবন্ত পুরুষ হলেন নাজমুল ৷ ডঃ নাজমুল এবং শামীম সারা উপন্যাসের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সদা উজ্জল। তারাই এ উপন্যাসের মূল পাত্র-পাত্রী। তাদের মুখ দিয়ে, কর্ম দিয়ে, চিন্তা দিয়ে, পরিকল্পনা দিয়ে কবি মঈনুদ্দীন তার জাতির জীবনের পূর্ণাঙ্গ সুখ-শান্তি ও বিস্তর কর্মক্ষেত্র, সৃষ্টির প্রয়াস পেয়েছেন। একটি সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশের সচেতন নাগরিক কাজকর্ম নেই বলে চুপচাপ বসে থাকলে চলে না। নিজেকেই খুঁজে নিতে হয় কাজ এবং অন্যের জন্যও তৈরি করা চাই অফুরন্ত কর্মক্ষেত্র। বিজ্ঞানভিত্তিক কর্মক্ষেত্র চালু করা এবং এর প্রতিটি কর্মচারীকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার-বিশ্লেষণ করে যথাযথ পরিকল্পনা করাই তো বুদ্ধিমানের কাজ। তাহলে জাতি অসংখ্য বেকার সমস্যা থেকে একটুখানি হলেও রেহাই পেতে পারে। সেই সঙ্গে যদি দেশের প্রচুর সম্পদ, যা অন্যের চোখে ফেলনা, রদ্দিমাল, সেসব দিয়ে একটি বিরাট পরিকল্পনাসহ কারখানা চালু করা যায় এবং খুব সুস্থ ও ধীরস্থিরভাবে লোকজন নিয়োগ করে তাদেরকে সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করে কাজ আদায় করা হয় তাহলে নিশ্চিতই সুফল পাওয়া যাবে। এমন ভাবনা কি ‘নয়া সড়ক’-এর ডাঃ নাজমুল ভেবেছেন? নাকি তার স্রষ্টা কবি মঈনুদ্দীন ভেবেছেন? নিশ্চিতই স্রষ্টার সৃষ্টি যদি কল্যাণকামী হয়, যদি উদ্দেশ্য সৎ ও মহৎ হয় তাহলে কবির কল্পনা কি বাস্তবের মানুষ বাস্তবায়ন করবে না কোনদিন? হ্যা, তা সত্যিই একদিন সম্ভব হবে। এ উজ্জল উদাহরণ হল ‘নয়া সড়ক’ স্রষ্টা তার মানসচরিত্র ডঃ নাজমুলকে দিয়ে ছেড়া কাগজ ইত্যাদি রদ্দিমালের কারখানা খুলেছেন। সেই সংগে আরো আরো বিভাগ জড়িত হয়েছে। যার প্রমাণ আজকের দিনের ‘সোনালী পেপার মিল’-এর উৎপাদন।

তবে কবির অন্য বিভাগগুলো এবং পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন হয় নি। হয়ত নিকট ভবিষ্যতে তা-ও হয়ে যাবে। এই উপন্যাসে শামীমা এবং নাজমুলের সাক্ষাৎ পরিচয় এক নাটকীয় পরিবেশে । সেভাবেই উপন্যাসের প্রতিটি চরিত্র উজ্জলতা পেয়েছে। এখানে আছে শাহেদা, যে নাকি হঠাৎ করে ধনেজনে স্বয়ম্ভর হতে চেয়েছিল। তাই, ডঃ নাজমুলকে শাহেদা ভেবেছিল এমন লোকের সাথে গাঁটছড়া বাঁধতে পারলে হয়ত তার জীবন সুখে স্বাচ্ছন্দ্যেই কেটে যাবে। তাই সে নাজমুলকে জয় করতে চেয়েছিল তার অমূল্য সম্পদের বিনিময়েও। কিন্তু সবাই সমান নয়। সমান নয় যাহেদুল করিমুলও। তারা শাহেদার কোপানলে পড়ে কেবল হাবুডুবুই খায় নি, বিনিময়ে তারা তাকে ব্যবহার করে অনেক আর্থিক সুবিধাও হাতিয়েছে। শেষ পর্যন্ত শাহেদারই এক চাচা শাহেদার পরিচয় পেয়ে লজ্জা ঢাকতে গিয়ে যাহেদুল-করিমুল কোম্পানীতে বিরাট একটা বিজনেস দিয়ে গিয়েছিল যে, অনেকটাই রমযান সাহেবের প্রায়শ্চিত্ত করার সামিল। সুনজরে দেখে না। তাই তারা বন্ধুর বেশে অষ্টপ্রহর লেগে রইল রদ্দিমাল সংস্থা ধ্বংস করার মতলবে। একদিন সুযোগ বুঝে কারখানায় আগুনও লাগিয়ে দিল। এতে আপাতত অনেক ক্ষতি হলেও শামীমা-নাজমুল তাদের তীক্ষ্ণ বুদ্ধির বলে পুনরায় গড়ে তুললো তাদের স্বপ্লের কর্মক্ষেত্র। একদিন সবই ফাঁস হল। শেষ পর্যন্ত যাহেদুল-করিমুল জেলে অবস্থান করতে থাকল। এদিকে শাহেদাসহ যাহেদুল-করিমুল স্ত্রীদ্বয়ও গিয়ে হাজির হল শামীমার অফিসে। শামীমার উদারতায় তারা রদ্দিমাল সংস্থায় কাজ পেলো। কিন্তু এ সংস্থাতো কেবল লাভের আশায় অন্য দশটা কোম্পানীর মত গড়ে উঠেনি। এখানে মানুষ তার কৃতকর্মের অতীত গ্রামীয় জীবন ভুলে গিয়ে নতুন করে সুন্দর জীবন শুরু করতে পারে।

তাই প্রথমে শাহেদাদের ভুল বোঝা বা নতুনকে গ্রহণে দ্বিধার কারণেই তাদের খাপ খাওয়াতে বেশ সময় লেগেছিল। ডঃ আলির সংস্পর্শে এসে শাহেদা ফিরে পায় তার সত্যিকারের জীবন । ডঃ আলি সংযমী মানুষ। তিনি পেশায় শিশু-মনোবিজ্ঞানী। তাই তার কাঁধে দায়িত্ব পড়ছে শিশুদের সামলানো। এখানে, এই কারখানায় যারা কাজ করেন তাদের শিশুকে যথাযথ সেবাযত্ন ও আদর-সোহাগে মানুষ করা হয়। একদিন শামীমার ছেলেকেও এখানের হেফাযতে রাখা হয়। এমনি পরিকল্পনা লেনিনের রুশ বিপ্লবের পর তার বন্ধু আন্তন মাকারেস্কো গড়ে তুলেছিলেন রাশিয়ায়। যা নাকি পাইওনিয়ার হিসেবে পরিচিত। একদিন ভারতগর্ব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও রাশিয়ার শিশুদের এই ব্যবস্থায় প্রীত হয়েছিলেন। তেমন সুন্দর চিন্তার অধিকারী নাজমুল-শামীম কেবল শহুরে পরিবেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে নি। তারা ছড়িয়ে পড়লো গ্রাম-বাংলায়ও। যে কৃষক দেশের আপামর জনতার খাদ্য জোগাড় করে, তাদের সুস্থ-সুন্দর জীবন এবং সেসব ছেলেমেয়ের জীবনকে সুন্দর করার দায়িত্বও তারা ক্রমে গ্রহণ করে। ফলে দেখা যায় যে, তারা গ্রাম এবং শহর সর্বত্রই এক মহান কর্মযজ্ঞে ব্যাপৃত হয়ে পড়েছেন। সেই সংগে নতুন কর্মক্ষেত্র যেমন এক এক করে সৃষ্টি হচ্ছে তেমনি প্রতিটি কর্মের প্রতিটি শাখায় নতুন নতুন মানুষ তার কাঙ্খিত কাজ পেয়ে যাচ্ছেন এবং নবোদ্যমে জীবনের পূর্ণ আস্বাদ লাভ করছেন। যেমন তসলিম আহমদ । তিনি কোথায় কি জুলফিকার প্রকাশ করতো তার কোন ভিত্তি ছিল না। অথচ নাজমুল-শামীম তাকে সামান্য অর্থ সাহায্য না দিয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি প্রকাশনা সংস্থা গড়ে এখান থেকে নয়া সড়ক প্রকাশের দায়িত্ব দিলেন। প্রথমে ভুল বুঝলেও শেষ পর্যন্ত তসিলম ঠিকই বুঝেছেন এবং কাজেও দক্ষতা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়তে আর দ্বিধা করেন নি। তাই মাসুদা তসলিমের হাত ধরে এনে বলেন, “এবার এক সঙ্গে চলেন আমার পাশে পাশে”

শহর থেকে গ্রাম, অন্ধকার গলি থেকে আলোয় ঝলমল সদর রাস্তা, যাকে বলে ভবিষ্যতের নাগরিকরা কবি খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীনের নয়া সড়ক ধরে একদিন নিশ্চিতই সভ্যতার স্বর্ণদারে পৌছে যাবে তেমন আকাঙ্ক্ষা ঔপন্যাসিকের থাকা কোন অযৌক্তিক নয় । আসলে, কবি-সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীরা যে পরিমাণ পড়াশুনা করেন, একজন রাজনীতিবিদ তার ধারেকাছেও যান কিনা সন্দেহ। যদি যেতেন, তাহলে বোঝাই যাচ্ছে যে, ‘নয়া সড়ক’-এর পরিকল্পনামাফিক পাকিস্তানীরা তেমন কোন সংগঠন দেশের মানুষের জন্য গড়ে তোলেনি, যা একটি আদর্শ হিসেবে পরিগণিত হতে পারে। এ ব্যাপারে একজন ঔপন্যাসিককেই এগিয়ে আসতে হয়েছে, তাতে তার আদর্শ বাস্তবায়িত হয়নি সেদিন কেবল পাকিস্তান বলে; কিন্তু আজো কি তেমন কোন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, যাতে ‘নয়া সড়ক’-এর অনুরূপ আদর্শ বাস্তবায়ন পন্ধিলতা ঠেলে দিয়ে স্বীয় মনোবাঞ্ছা পূরণ করায় ব্যস্ত। আমরা আশা করি কবি মঈনুদ্দীন একাডেমী’ ‘নয়া সড়ক’সহ কবির লেখাগুলো প্রকাশ করে কবিকে জাতির কাছে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবেন।

 

লেখক: আকাশ খান

The post নয়া সড়ক: খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন-এর একখণ্ড পরিচয় appeared first on Bangladesh Study Forum.

জঙ্গলবাড়ী বাতিঘরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

$
0
0

ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার জঙ্গলবাড়ী গ্রামে শিক্ষা ও সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান শিখরী ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত গ্রাম পাঠাগার জঙ্গলবাড়ী বাতিঘরের উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ২০১৭ উপলক্ষ্যে “শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণ ও বুদ্ধিবৃত্তিক জাতি বিনির্মাণে পাঠাগারের প্রয়োজনীয়তা” শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জঙ্গলবাড়ী বাতিঘরের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আবু সাঈদ ফকিরের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার (১৪ই ডিসেম্বর, ২০১৭ খ্রি:) বাতিঘর প্রাঙ্গণে উক্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তব্যরত বাতিঘরের তরুণ সদস্য

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক ছাত্র সংসদের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সঞ্জীবনের সভাপতি ফাহিম আহম্মেদ মন্ডল, শিখরী ফাউন্ডেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক হিমেদুজ্জামান হিমেল, সঞ্জীবনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নূর হোসেন হৃদয় প্রমুখ।

শিখরী ফাউন্ডেশনের পরিচালক মেহেদী কাউসার ফরাজী’র সঞ্চালনায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন জঙ্গলবাড়ী বাতিঘরের সদস্য ইকরামুল হাসিব ইকরা, মোঃ আহসান হাবীব, জোবায়েদ হোসেন সাদ্দাম, আবু রায়হান ফরাজী, বেলায়েত হোসেন ফরাজী প্রমুখ।

উপস্থিত শিশু-তরুণ-যুবকদের একাংশ!

সভায় বক্তাগণ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণে পাঠাগারকেন্দ্রিক সমাজ বিনির্মাণে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান। আলোচনা সভার শেষে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন হাফেজ মোঃ রাকিব আল হাসান।

বাইরেও ছিলো শিশুদের উপচে পড়া ভিড়!

The post জঙ্গলবাড়ী বাতিঘরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত appeared first on Bangladesh Study Forum.

একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজন বাতিঘর

$
0
0

দামী সেল্ফ কিনে বই সাজিয়ে রাখলেই তা গ্রন্থাগার কিংবা কোন জায়গায় বসে কিছু পড়লেই তা পাঠাগার হয় না। যদি তাই হতো তাহলে বাজারে শতশত বইয়ের দোকান কিংবা অলিগলিতে কোটি কোটি স্কুল থাকতেও দেশে “আলোকিত মানুষ” -এর আকাল দেখা দিতো না।

সৈয়দ মুজতবা আলী ফ্রাঁসের উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন, “যত বেশী নতুন নতুন জ্ঞানের সাথে পরিচিত হবে, মানুষের মনের চোখ তত বেড়ে যাবে।” অর্থাৎ, এই পৃথিবীতে আপনি কতটুকু দৃষ্টিসম্পন্ন বা আলোকিত হবেন, এটা নির্ভর করছে একান্তই আপনার শুভেচ্ছার উপর।

বর্তমানকালের একজন আলোকিত মানুষ সাবিদিন ইব্রাহীমের মতে, “পাঠাগারের জন্য কোন ঘর লাগে না, কোন আসবাবপত্র লাগে না। পাঠাগার হচ্ছে এমন একটা সিস্টেম, যেখানে প্রয়োজন শুধু বই এবং পাঠকের। এ দু’টো থাকলে পৃথিবীর যেকোন স্থানই পাঠাগার হতে পারে।”

সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছেন, বাঙালি জাতির বই কেনার অভ্যাস নেই। বই কিনতে বললেই অজুহাত দেখায় অত টাকা কোথায়? এক্ষেত্রে জনাব মুজতবা সাহেবের প্রশ্ন, “টাকা নেই কথাটা যিনি বলছেন, কোথায় দাঁড়িয়ে বলছেন? ফুটবল মাঠ নাকি সিনেমা হলের কিউ থেকে?”

অর্থাৎ, বেঘোরে টাকা খরচের বেলায় বাঙালির হুঁশ থাকে না, যত্ত হিসেব বই কেনার বেলায়! এদেরকে তাচ্ছিল্য করে সৈয়দ মুজতবা আলী লিখেছেন, “হিসেব করে বই কেনে সংসারী লোক।” এদিকে বইপোকাদের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলছেন, “পাঁড় পাঠক বই কেনে প্রথমটায় দাঁতমুখ খিঁচিয়ে, এরপর চেখে চেখে সুখ করে নেয়, শেষে কেনে ক্ষ্যাঁপার মত এবং তাতে চুর হয়ে থাকে।”

অর্থাৎ, বই কেনা ও পড়া একটা নেশার মতোই, সচেতন পাঠকের নিকটে।

তবে, ব্যাঙের ছাতার মতো অলিগলিতে লাইব্রেরী কিংবা স্কুল খোলার আগে মাতাল পাঠক হতে হবে এবং পকেটের পয়সা খরচা করে বই কেনার অভ্যাস করতে হবে। বই কিনে পৃথিবীর ইতিহাসে কেউ দেউলিয়া হয়নি এবং বই পড়ে কেউ অমানুষের জিন্দেগী যাপন করে নি।

নিত্যনতুন বই পড়লে নতুন নতুন চোখ গজাবে এবং মন ও মস্তিষ্ক ততবেশী আলোকিত হবে। গ্যারান্টি দিচ্ছি, আলোকিত মনের মানুষ কখনোই পৃথিবীর ক্ষতি করে না।

জ্ঞান অর্জনকে যদি আলোকিত মন গড়ার পন্থা বলা হয়, তাহলে প্রচলিত সংজ্ঞায় যেসব পাঠাগার বা গ্রন্থাগার এদেশে আছে, সেগুলো যদি প্রকৃতপক্ষেই আলো বিতরণ করতে চায়, তাহলে সেগুলোকে একেকটি “বাতিঘর” হিসেবে রূপান্তরিত করা উচিত।

বাংলাদেশ বা বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে একেকটি বাতিঘর একেকটি মিসাইল স্বরূপ। বাতিঘরের একেকটি বই একেকটি হাইড্রোজেন বোমার চেয়েও বেশী ক্ষমতা রাখে। মিসাইল বা পারমাণবিক বোমা পৃথিবীর ক্ষতি করে, কিন্তু বাতিঘর পৃথিবীকে স্বপ্নের আবাসভূমি হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।

সমাজের পশ্চাৎপদ অংশ অর্থাৎ শিশু ও নারীদেরকে আলোকিত করার জন্য বাতিঘর একটি আদর্শ স্থান। আলোকিত প্রজন্মই আলোকিত ভবিষ্যৎ উপহার দিবে।

এই পৃথিবীতে এতো এতো তন্ত্র-মন্ত্রের প্রয়োজন নেই। মানবজাতির প্রতি সৃষ্টিকর্তার প্রথম নির্দেশ “পড়”, সুতরাং মানবজাতির এক ও অভিন্ন ধর্ম হচ্ছে পড়া। আপনি সৃষ্টিকর্তার নামে পড়া শুরু করে, নানাবিধ জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে আলোকিত করে তোলার ফলেই কল্যাণের দিকে অগ্রসর হতে পারেন।

পৃথিবীর কোন সরকার কিংবা রাষ্ট্র আপনাকে পরিপূর্ণ আলোকিত হতে দিবে না, নিজেদের শাসনতন্ত্র রক্ষার স্বার্থেই। যেটুকু শিক্ষা শুধু সরকার বা রাষ্ট্র চালানোর জন্য দরকার, সেই সেন্সর্ড শিক্ষাটুকুই আপনাকে দেয়া হবে। কিন্তু, আপনি যদি নিজেকে “আলোকিত বিশ্বনাগরিক” হিসেবে দেখতে চান, সমাধান একটাই, পড়ুন!

পড়ার ক্ষেত্রে কোন বাছবিচার করতে নেই। একজন আদর্শ পাঠককে সর্বভূক হতে হবে। পৃথিবীর সব ধর্মের, অধর্মের, মতের, অমতের সব লেখা আপনি না পড়ে কিভাবে বুঝবেন যে আপনার মতই সেরা? লবণ যে নোনতা, এটা না চেখে বুঝবেন কি করে? আলোকিত মন গড়ার কাজে নিজেই সেন্সরশিপ আরোপ করে সফল হবেন কি করে?

“জ্ঞানসমুদ্র” তো কারও বাপদাদার সম্পত্তি নয় যে সেখান থেকে আপনাকে তৃষ্ণা নিবারণে কেউ বাঁধা প্রদান করবে! আপনি ক্রস কানেকশন করতে শিখুন। ইতিহাস আবেগ নয়, ইতিহাস হচ্ছে ফ্যাক্ট। সর্বদলীয় ইতিহাস পড়ে ক্রস কানেকশন করে প্রকৃত ইতিহাস বের করে আনা জানতে হবে। সুসাহিত্য, কুসাহিত্য বা অপসাহিত্য নির্ধারণ করার জন্য আপনাকে সবই পড়তে হবে। সর্বদা নিজের আদর্শিক মানদন্ডে শাণ দিতে হবে। হুটহাট ভালমন্দ বিচারের আগে একটু নিরীক্ষণ করতে হবে।

নিজে বেশী বলবেন না, যারা বেশী বলে তাদের থেকে দূরে থাকুন। যা জানতে চান, নিজে পড়ে জানুন। বক্তৃতা শুনে কোনদিন কোন সঠিক জ্ঞান আপনি পাবেন না।

মুক্ত মনা হতে হলে আগে নিজেকে নিজের অধীন থেকে মুক্ত করুন। জ্ঞানসমুদ্র পাড়ি দিয়ে কেবলই কল্যাণের দিকে এগিয়ে যান। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজন নিজেকে গড়ে তুলুন।

জ্ঞানসমুদ্রের অপরপ্রান্তে যদি আলোকিত গন্তব্য থাকে, বাতিঘর কেবলই সেই গন্তব্যের প্রারম্ভিক টিকিট কাউন্টার মাত্র। আসুন, নিজের ইচ্ছেমত (বই নিন) টিকিট কাটুন, নির্ধারিত গন্তব্যের পানে আপনার যাত্রা শুভ হোক…

The post একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজন বাতিঘর appeared first on Bangladesh Study Forum.

লেখকের কম্ম, লেখকের ধম্ম!

$
0
0

প্রতিদিন কিছু না কিছু না পড়তে পারলে লেখক হওয়া আপনার কম্ম নয়, ভাইয়া-আপুরা!

আমার পরিচিত এক তরুণ লেখক যার ৩/৪ টা বই এরই মধ্যে প্রকাশ হয়েছে, তার বইয়ের ফ্লাপে লেখক পরিচিতিতে দেখি তিনি লিখছেন: প্রিয় শখ- বই পড়া!

বেশ কয়েকজন কাব্যযশ প্রার্থী বড়লোক কন্যা বা ব্যবসায়ী বধূকেও দেখলাম, অতি কাঙ্খিত লেখক পরিচিতিতে লিখছেন ‘অবসরের প্রিয় কাজ: বই পড়া’!

মানে তিনি বা তেনারা আর সব কাজে এতই ব্যস্ত যে বছরে কয়েকদিন ছুটি পেলে বা ফুরসত পেলেই কেবল পড়তে পারেন! স্কুল কলেজে আমরা যে ‘মাই হবি’ রচনা/প্যারাগ্রাফ লিখতাম সেটা মনে পরে গেল! স্কুল কলেজের বাচ্চারা বা সাধারণ পাঠককুল লিখতে পারেন ‘বই পড়া’ আমার হবি কিন্তু যিনি বই লিখে ফেলেছেন তার জন্য বই পড়া স্রেফ শখ থাকে কীভাবে?

লেখক হওয়ার বা হতে চাওয়ার যে পাপ করেছেন তার একটা যাবজ্জীবন দণ্ড আছে!

লেখক হওয়ার বা হতে চাওয়ার যে পাপ করেছেন তার একটা যাবজ্জীবন দণ্ড আছে!

প্রতিদিন কোন কিছু না জানা বা না শেখা বা কোন কিছু না পড়ে থাকা অনেক গর্হিত অপরাধ! অবসরে বা কাজের ফাকে বই পড়লে লেখালেখি আপনার কম্ম নয়। একজন চাষী প্রতিদিন তার মাঠে না গেলে তার ফসল নষ্ট হয়ে যায়, একজন কাঠমিস্ত্রি প্রতিদিন তার বাটালি ধার না দিলে সেটাতে মরিচা ধরে যায়, একজন শিল্পী প্রতিদিন রেওয়াজ না করলে তার কন্ঠে ফারাক স্পষ্ট হয়ে যায়। আর আপনি লেখক বলে দাবি করেন আর পড়াকে শখ বা অবসরের পার্শ্ব কাজ বানিয়ে রেখেছেন! আপনি কি লেখক ও শখে শখে?

লেখক নিয়মিত জানা বুঝা, পড়াশুনার ফাকে ফাকে অন্য কাজ করেন। অন্য কাজের ফাকে ফাকে বা অবসরে বা শখে পড়লে আপনি লেখক কীভাবে?

লেখক নিয়মিত জানা বুঝা, পড়াশুনার ফাকে ফাকে অন্য কাজ করেন। অন্য কাজের ফাকে ফাকে বা অবসরে বা শখে পড়লে আপনি লেখক কীভাবে?

প্রতিদিন জমির খেয়াল না রাখলে যেমন কেউ চাষা হতে পারে না, প্রতিদিন হাতুরি-বাটাল শান না দিলে যেমন কেউ কাঠমিস্ত্রি হতে পারে না, প্রতিদিন রেওয়াজ না করলে যেমন কেউ শিল্পী থাকতে পারে না তেমনি প্রতিদিন যার পড়াশুনা নাই সে নিজেকে লেখক দাবি করে সেটা কি হাস্যকর না?

The post লেখকের কম্ম, লেখকের ধম্ম! appeared first on Bangladesh Study Forum.

Bangladesh China friendship in context of Strategic partnership

$
0
0

Bangladesh China now all weather strategic partner. The process takes time and it’s not easy for both countries to forget their past and simply be friends. Cause in 1971 Liberation war China did not support Bangladesh instead China backed Pakistan. Strategic relations between Bangladesh China based on self interest. To write this article and to prove my logic I used  several authors Quotes like:

Nicholas Christ of and Sheryl Wu’s predictions that,  the shifting center of the world would eventually settle in Asia. Since then a view is burgeoning that America is in ‘elegant decline’ also used Fareed Zakaria powerfully argued that about rise of the rest. Though rest needs sharper definition but its clearly we can assume this so called rest is Asia. Re-emergence of Asia a dream for many Asian. It’s a sense of pride for them which they have longed for. Many blame that colonial domination is a cause for Asian poverty but other believes that responsibility lies on their shoulder. The western colonial domination more its effects than its cause.  China, with Bangladesh in South Asia. This article is nothing but an examination of a relationship largely through the prism of Bangladeshi lenses reflecting a Bangladeshi perception of Chinese behaviour and China’s relationship with Bangladesh. This article is ultimately expected to enhance a greater global understanding of the moods and behaviour-pattern of the Chinese dragon on a wider global matrix.

Chinese believes that, everything in the world has two seemingly opposing elements.  If we want to develop quality of our lives and the well-being of the world depend on bringing such opposing tendencies into balance with one another. Power, generally in the international arena, has both the ‘hard’ and ‘soft’ versions. Hence the building up of military capabilities in pursuit of ‘hard’ power, and the setting up of Confucian Institutes in pursuit of ‘soft’ power. A peaceful global, regional and domestic environment to sustain its reforms and meeting challenges posed by the modernisation policies. Chinese like to express themselves by metaphors and maxims. Xiaoping’s famous adage was “hide your capabilities and bide your time”. He was also strong on pragmatism when he said, “it does not matter whether the cat is black or white as long as it catches mice”. So, go to the market place. But there are no friends in the market place, only self-sustaining business interests, so nurture your allies the best you can. The current leader Mr Xi Jinping has launched a new mantra, the ‘China Dream’ or Zhunguo Meng in Mandarin. It comprises mainly three elements. One, a new kind of big-power relationship with the US, one of equality: it is not the ‘my way or the highway’ kind, but one that implies “you go your way and I will go mine, together or separately, but in peace’.

A win –win’ relationship with partners and interlocutors. India, or strategic allies like Pakistan, a country so key to his ‘One Belt, One Road’ initiative, which is also an essential part of China’s ‘west-ward march’ in quest of resources. This also involves a massive US$ 45 billion worth of infrastructural investment along the China-Pakistan Economic Corridor.

Consistency in Chinese Behaviour

There appears to be a consistency in the way China behaves with the outside world. Policy framework was initially laid down by Mao. He had analysed the globe as being divided into three worlds: The first comprising the then two Superpowers, the US and the Soviet Union. The second consisted of the countries of Europe, Canada and Japan. The rest including China belonged to the third world. He identified the ‘first world’ as ‘the source of all instability’.

China take some steps to become a strong superpower:

1.Chinese defence budget second highest in the world. Huge money investing on trade.

  1. China should feel proud for it’s navy cause China’s navy is the fastest growing arm of the military capable of rapidly deploying forces overseas.
  2. China has missiles with the capacity to hit any targets anywhere in the world, it is not necessary for China to station troops abroad.

China did not support Bangladesh in 1971 Liberation war because China fear “ Soviet social imperialism, and Indian expansionism”. But after independence  China accepted and recognised Bangladesh and it quickly made allies  with Bangladesh which China called all-weather friend’, almost the same as Pakistan and china  gaining an additional partner in South Asia.

Initial Position on Bangladesh:

The Bangladeshi leadership, led by Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, immediately seemed to intellectually understand China’s position, conditioned by its adverse relations with India and the Soviet Union. They adopted the tactic of refraining from giving umbrage to China by publicly criticising its actions. The softening of Beijing’s position began with the mutual recognition of Pakistan and Bangladesh.

Deepening Relationship:

Gradually Bangladesh China relations became stronger than before. China supported Bangladesh in a many way as example :When Bangladesh and India were in a dispute over the construction of the Farakka barrage by India upstream on the Ganges river, Vice Premier Li Hsien-nien declared that ‘China firmly supports the government and people of Bangladesh in their just struggle to safeguard national independence state sovereignty and resist foreign interference. Bi lateral relations become stronger as the time proceed. In 2002, Major defence agreement signed  between Bangladesh and China and 2005 declared as Bangladesh china friendship year.

China helped Bangladesh in a many way : In the trade sector also in  infractural  sector. Sheikh Mujibur Rahman conference hall now in past it  known as Bangladesh China friendship conference hall.

Bangladesh China relations more complicated than before after 2007 Hasina  government proven themselves as a pro India. The Hasina and Awami league government signed many treaty with India including historic Land Boundary Agreement but despite all of that there is a good signed Chinese president xi jinping visited Bangladesh last year and in this visit 27 treaty had signed between Bangladesh and China.

Contemporary Partnership

The visit indeed great success for contemporary government 27 treaty signed between Bangladesh and China. The agreements were across a large span of economic activities, as well as governance-maritime cooperation, joint feasibility study of a free trade area, new Internet Communications Technology framework, counter-terrorism collaboration, information sharing, tackling climate change, rail links, power and energy. Also China clearly discuss with Bangladesh about   ‘One Road, One-Belt’ initiative. But the Chinese did not walk away with the Chittagong deep-sea project, obviously because it would bring discomfort India along with USA.

Defence

Defence is a area where bi lateral relations are burgeoning. In 2002, Bangladesh and China signed a defence treaty where china promised that it will help Bangladesh by provide Military equipment, give training Bangladeshi soldiers. Co operation is planned in the sector of UN peace keeping, anti piracy and disaster management.

Hardware and training are essential requirements for Bangladesh which China appears to be an appropriate source. There is also some issue for which we need china by our side: Bangladesh need mega loans for it’s mega project this need only satisfy by China. Xi jinpeng visit give psychological satisfaction that Bangladesh is important not only for India also for China.

Regional Ramification  :

Bangladesh could perhaps play a role in using its linkages with China and India for the benefit of all three countries. Both the Asian giants could actually profit from collaborating, in third countries such as Bangladesh or any other South Asian State, in bringing some of the megaprojects of the region to fruition. That would most certainly be in consonance with what has been described in Chinese as well as in the regional parlance as a ‘win-win situation’.

Goldman Sachs has predicted that by 2041, China would overtake the US as the world’s largest economy. China always claimed that it’s rise is peaceful. We hope that rise of China brings some advantage also for Bangladesh.

So we can draw conclusion as: China is important for Bangladesh as a strategic partner. So Bangladesh need more strategic steps need more diplomatic engagement and have to balance with China economically and strategically.

 

The post Bangladesh China friendship in context of Strategic partnership appeared first on Bangladesh Study Forum.


প্রগতির পদাতিক: সোমেন চন্দ

$
0
0
সোমেন চন্দ একজন প্রজ্ঞাবান মার্কসবাদী এবং নিষ্ঠাবান সংগঠক। এই কমিউনিষ্ট এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী নেতার সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো তিনি একজন জীবনবাদী লেখক। যিনি তার কলমে ধারণ করেছিলেন মেহনতি মানুষের জীবনগাঁথা।প্রগতির জন্য আমৃত্যু কাজ করেছেন তিনি।

প্রগতির পদাতিক সোমেন চন্দ ১৯২০ সালের ২৪ মে তৎকালীন বৃহত্তর ঢাকা জেলার আশুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর বাবার নাম নরেন্দ্র কুমার চন্দ। মাতার নাম হীরণ বালা। সোমেন চন্দের পৈত্রিক নিবাস বর্তমান নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার বালিয়া গ্রামে। যদিও বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত জীবনী গ্রন্থমালায় ( হায়াৎ মাহমুদ সম্পাদিত) বলা হয়েছে সোমেন চন্দের জন্ম বুড়িগঙ্গার অপর পাড়ে অবস্থিত জিন্জিরার ধীতপুর গ্রামে। সোমেন চন্দের মায়ের নাম অজ্ঞাত যিনি প্রসব ব্যাথায় মারা যান, বলে উক্ত বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সোমেন চন্দের বৈমাত্রেয় ভাই কল্যাণ চন্দের কাছ থেকে জানা যায়, সোমেনের মায়ের নাম হীরণবালা, যিনি কলেরায় মারা যান। সোমেনের বয়স তখন মাত্র চার।

সোমেনকে দেখা শোনার জন্য তার বাবা নরেন্দ্র কুমার চন্দ দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। ছোট মা সরোজহাসিনী বিশ্বাস তথা সরযূবালাকে নিজের মা হিসেবেই জানতেন। সোমেন তাকে এত ভালোবেসেছেন যে ম্যাক্সিম গোর্কির ‘মা’ উপন্যাসের পাভেলের মা’ র সাথে নিজের মাকে এক করে দেখেছেন। বাবা নরেন্দ্র কুমার চন্দ মিটফোর্ড মেডিকেল স্কুলের স্টোর কিপার ছিলেন। তাঁর বেতনের টাকায় টেনেটুনে সংসার চলত।

শৈশব থেকে জেদি সোমেনকে খাওয়ানোর সময় মামা- দাদিকে গল্প বলতে হতো। সপ্তম – অষ্টম শ্রেণিতে থাকাকালীন বাই- সাইকেলের বায়না ধরেছিল, যা তার বাবা পূরণ করেছিল। মৃত্যুর দিন পর্যন্ত এ সাইকেল ছিল তার সর্বকালীন সঙ্গী। ১৯ ৩৬ সালে পোগোজ স্কুল থেকে প্রবেশিকা পাশের পর তাকে ভর্তি করানো হয় মিটফোর্ড মেডিকেল স্কুলে। যদিও তিনি ডাক্তারি পরতে রাজি ছিলেন না। পারিবারিক চাপেই তাকে মেডিকেল স্কুলে ভর্তি হতে হয়েছিল। মাত্র একবছর পড়ার পর তিনি পরীক্ষা দিলেন না। তার বাবার সাথে পরামর্শ করে ডা. লিল্টন তাকে পাশ করে দিতে চাইলেন।কিন্তু তখন তার মনে একটাই ভাবনা, কিভাবে মেহনতি মানুষের মুক্তি মিলবে?

সোমেনের মনে বিপ্লবী চিন্তার বীজ বপন করেছিলেন তার বাবা নরেন্দ্র কুমার। স্বদেশী যুগের মানুষ নরেন্দ্র কুমারের কাছেই সোমেন জেনেছিল বিপিনচন্দ্র পাল,সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, চিত্তরন্জন দাশ, বিপ্লবী ক্ষুদিরাম সম্পর্কে। অফিস শেষ করে রাত করে বাড়ি ফিরতেন নরেন্দ্র কুমার। অফিসের পাশে অবস্থিত ঔষধের দোকানে পত্রিকায় দেশ – বিদেশের খবর পড়তেন, ব্যাখা করে অন্যদের শোনাতেন। তার দক্ষিণ মৈশন্ডির ভাড়া বাসা ছিল,বিপ্লবীদের নিরাপদ ঠিকানা। সরকারী চাকুরের বাসায় বিপ্লবীদের যাতায়াত ভাবা যায়! কিন্তু সোমেন উদ্বিগ্ন ছিল না। সে নিজেও বই পড়ার আগ্রহ থেকে বিপ্লবীদের সাথে মিশতে থাকে।

খুব অল্প বয়সেই সোমেন বিশ্বসাহিত্যের অনেক নামী লেখকের বই পড়ে ফেলে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দস্তয়েভস্কি,হেমিংওয়ে,কডওয়েল,বার্নাডশ,মানেকশ প্রমুখ। ১৯৩৭ সালে তিনি লিখেন তার ছোটগল্প’ শিশু তপন’ যেটি সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এবছরই তিনি বন্যা নামে তার একমাত্র উপন্যাস লিখেন। তার লেখা ছোটগল্পের সংখ্যা ২৫ টি,নাটক ২ টি,কবিতা চারটি (সংখ্যা নিয়ে মতভেদ রয়েছে)। সোমেন চন্দের ইঁদুর নামক ছোট গল্পটি বহুভাষায় অনূদিত হয়েছে। তাঁর এ ছোটগল্পটি বিশ্বজোড়া খ্যাতি এনে দেয়।

সোমেন চন্দের লেখায় অনুপ্রাণিত হয়েছে, বাংলাসাহিত্যের জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘চিলেকোঠার সেপাই’  এবং সেলিনা হোসেনের ‘নিরন্তর ঘন্টাধ্বনি’ উপন্যাসে সোমেন চন্দকে তুলে ধরা হয়েছে।তাঁর মৃত্যু পর কলকাতা বাংলা একাডেমী সোমেন চন্দ পুরস্কার চালু করে। কমিউনিষ্ট পাঠচক্রের( গোপন) সূত্রে সোমেন চন্দের পরিচয় হয়,আন্দামান ফেরত বিপ্লবী সতীশ পাকড়াশীর সাথে। তার কাছে পাঠ নেন মার্কসীয় দর্শনের। ক্রমেই পরিচয় হয় রণেশদাশ গুপ্তসহ বামপন্থি বিপ্লবী নেতাদের সাথে। কমিউনিষ্ট পাঠচক্রের প্রকাশ্য শাখা প্রগতি পাঠাগার, যেটি জোড়পুল লেনে ছিল। সেখানেই সোমেন পড়তেন। বিপ্লবী করৃনকান্ডের অংশ হিসেবে স্থাপিত হয় বিপ্লবী লেখক সংঘ, সোভিয়েত সুহৃদ সংঘ। সোমেন রেল শ্রমিকদের ইউনিয়নে তাদের জন্য কাজ করতে থাকে। কখনো কখনো ঢাকার পাশ্ববর্তী গ্রামে গিয়ে অসহায় মানুষদের খোজ নিতেন। গুরু সতীশ পাকড়াশী সোমেনকে বলেছিল,বিপ্লব কেবল আন্দোলন করেই হয় না। লেখালেখির মাধ্যমেও বিপ্লব আনা যায়। সোমেন গুরু কথা অনুযায়ী গণসাহিত্য রচনা করেছিল।প্রাত্যহিক আড্ডায় তা পড়ে শুনাত।

১৯৪২ সালে ৮ মার্চ রেলশ্রমিক নিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী মিছিলে নেতৃত্ব দিচ্ছিল সোমেন চন্দ।সুত্রাপুরের সেবাশ্রমের নিকট কমিউনিষ্টদের আরেক দল ষন্ডারা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।তাকে মাথায় আঘাত করা হয়,চোখ উপরে নেয়া হয়,নাড়ীভুঁড়ি ছিটিয়ে দেয়া হয়। মাত্র ২১ বছর ১৫ দিনের মাথায় প্রগতির পদাতিক সোমেন চন্দের জীবনাবসান হয়,সেদিন তার রক্তাক্ত হাতে ছিল,কমিউনিষ্টদের লাল পতাকা।

লেকচার নোট

১১৩ তম পাবলিক লেকচার।

বক্তা: মো: নুরুন নবী মিল্লাত, শিক্ষার্থী দর্শন বিভাগ, ঢা. বি.।

 

 

The post প্রগতির পদাতিক: সোমেন চন্দ appeared first on Bangladesh Study Forum.

পড়ুয়াদের প্রিয় বন্ধু রকমারি!

$
0
0

বই হচ্ছে চিন্তার সঙ্গী, নিজেকে সমৃদ্ধ করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। ইচ্ছে করলেই বিশ্বের সব বই পড়া সম্ভব নয় বা দরকারিও নয়।  কিন্তু কোন কোন সময় কোন এক বা একাধিক বই অতি প্রয়োজনীয় হয়ে দাড়ায়। তখন ঢাকার রাস্তা সাতরে বই খোঁজা সব সময় সম্ভব নাও হতে পারে। আবার অনেক সময় হাতের কাছের বইয়ের দোকানে প্রয়োজনীয় বইটি নাও পেতে পারি। সেই মুহূর্তে রকমারি যে কত উপকারি বন্ধু সেটা বলাই বাহুল্য!

দিনে দিনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বইয়ের আড়ত হয়ে দাড়িয়েছে রকমারি! প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ বইই সংগ্রহ করার সুযোগ তৈরি হচ্ছে রকমারিতে। এখন বই কেনার বিষয়টি দুইভাবেই সেড়ে থাকি। প্রতি মাসে একাধিকবার বইয়ের দোকানে ঢু মারা হয় বা বইয়ের দুনিয়ার আপডেট রাখার কাজটা করা হয়, মাঝে মাঝে হয়তো কোন বই কেনা হয়।  তবে ইদানীং রকমারিতে বই কেনা বেড়েছে। ডিসেম্বরে তিনবার বই কেনা হলো; দুবার হলো রকমারিতে।
যখন পকেটে কিছু অতিরিক্ত টাকা নিশপিশ করে তখন তার সদ্ব্যবহারের যে আইডিয়াটা মাথায় আসে সেটা হলো এক বা একাধিক পছন্দের বই কিনে ফেলা।

রকমারি সেটা সহজতর করে দিয়েছে। পছন্দের বই বাছাই করুন আর অর্ডার করে দিন! ব্যস। বই চলে আসে আপনার ঠিকানায়!  রকমারি যেভাবে প্যাকেট করে বই পাঠায় সেটা অসাধারণ লাগে! মনে হচ্ছে কেউ যেন উপহার পাঠালো! নিজেই নিজেকে অটোগ্রাফসহ অনেকবার বই উপহার দিয়েছি। রকমারি সেটাকে অসাধারণ করে দিয়েছে। কাঙ্খিত বই সুন্দর প্যাকেটে করে চলে আসে নিজের ঠিকানায়!

ঢাকায় খরচ নিচ্ছে মাত্র ৩০ টাকা! নেওয়া যাচ্ছে যত ইচ্ছা তত বই! জ্যাম, রিকশা ভাড়া, হ্যাশল পেরিয়ে বই আনতে যাওয়া যখন কষ্টকর হয়ে দাড়ায় তখন রকমারি অসাধারণ বন্ধু! তিনদিন আগে একটি বইয়ের ব্যাপারে বেশ তৃষ্ণা লেগেছিল, আশপাশে পাবো না বলে যখন নিশ্চিত হলাম তখন এক মিনিটে রকমারিতে অর্ডার দিলাম। তিন দিনের মাথায় বই এসে হাজির।

সব সময় এমনটা হয়না অবশ্য! এ মাসের শুরুতে তিনটি বইয়ের অর্ডার দিলাম। একটি বই সংগ্রহ করে দিতে পারেনি আর বাকি দুটি বই সংগ্রহ করে দিতে প্রায় ৮-১০ দিন লেগে যায়! আমি অবশ্য তেমন কিছু মনে করেনি কারণ উপহারের জন্য অপেক্ষায় থাকার মজাটা নিলাম সেবার আর যেহেতু ক্যাশ ইন ডেলিভারিতে অর্ডার করি তাই কোন লোকসানের সম্ভাবনা নেই! আমি নিশ্চিন্তে অর্ডার করি আর রকমারি টিম সকল টেনশন নিজের কাঁধে নিয়ে নেয়!
আজকে যেমন রকমারির ডেলিভারি টিমের এক সদস্য বই নিয়ে আমার ঠিকানায় উপস্থিত আর আমি তখন আমার গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশকের সাথে দেড় ঘন্টাব্যাপী জরুরি মিটিংয়ে।

আসলে আমাদের সব মিটিং জ্ঞানগর্ভ এক আড্ডায় পরিণত হয়; অবশ্য জ্ঞান শেয়ারের কাজটা আমার সেই প্রিয় প্রকাশকই করেন, আমি হয়তো বিভিন্ন প্রশ্ন ছুড়ি আর মাঝে মাঝে মতামত শেয়ার করি। আমার সেই মহাব্যস্ত প্রকাশকের সাথে দীর্ঘদিনের ব্যবধানে আড্ডার সুযোগ তৈরি হলে পুরো সময়টা সেখানে দিতে চাই। আজকে ঠিক এ সময়টাতে কয়েকবার কল হলেও কথা বলার সুযোগ হয়নি। মিটিং থেকে বের হয়ে যখন কল দিলাম তখন জানলাম রকমারি টিমের সেই ডেলিভারি ম্যান ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছে। খুবই খারাপ লাগলো আবার শ্রদ্ধা লাগলো রকমারির সেই বন্ধুর প্রতি। উনাকে যথাসম্ভব স্বল্প সময়ের মধ্যে অপেক্ষা থেকে মুক্ত করলাম!

প্রিয় বইটি হাতে পেয়ে রকমারি টিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উপায় খুজছিলাম। এজন্য এই থ্যাংক নোটস!
গত এক দশকে যে কয়টা ভালো উদ্যোগ এসেছে তার মধ্যে রকমারি একটি। এর ফলে দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে যে কেউ তার পছন্দের বা প্রয়োজনীয় বইটি কিনতে পারছে। এটা ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারলে দেশে আরো অনেক ইতিবাচক ঘটনার সূত্র হতে পারে। আমরা যদি একটি জ্ঞানভিত্তিক বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চাই তাহলে রকমারি সেখানে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
একটি অন্যরকম বাংলাদেশ নির্মাণে, একটি ইতিবাচক বাংলাদেশ নির্মাণে কাজ অব্যাহত রাখুক রকমারি ডট কম ও অন্যরকম গ্রুপ।
রকমারি টিমের প্রতিটি সদস্যের প্রতি ভালোবাসা, শুভেচ্ছা ও অশেষ কৃতজ্ঞতা!

The post পড়ুয়াদের প্রিয় বন্ধু রকমারি! appeared first on Bangladesh Study Forum.

প্রথমে অজ্ঞতা, পরে প্রাজ্ঞতা

$
0
0

বই মানুষকে প্রথমে করে অজ্ঞ,এরপর জ্ঞানী তারপরে প্রাজ্ঞ। বই প্রথমে মানুষকে এটা শেখায় যে,”তুমি খুব কমই জানো।”ব্যক্তির জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা ধরিয়ে দেয়। সে বুঝতে শেখে, যে সে অজ্ঞ! ব্যক্তির এই বোধ জন্মে, যে সে কতটা অজ্ঞতার আঁধারে ডুবে ছিল। আর নিজের অজ্ঞতার আবিষ্কারই সবচেয়ে বড় আবিষ্কার। অজ্ঞতা সম্পর্ক অবগত হওয়ায় ব্যক্তির মধ্যে যেমন হীনতা কাজ করে,তেমনি তীব্র হয়ে ওঠে জানার বাসনা।

বই পড়ে কেউ কেউ আত্মসচেতন হওয়ার আগেই জ্ঞানী হয়ে ওঠে। নিজের অজ্ঞতা না বুঝে জ্ঞানীর চেয়ারে বসে জ্ঞান জাহির করতে  শুরু করে; সে আসলে জানেনা যে চেয়ারটাতে সে বসেছে তার পাঁ ঘুনে ধরা। শরীরটা একটু এলিয়ে দিলেই পতন হয়ে যাবে।


বই অজ্ঞতাকে আবিষ্কারের মাধ্যমে চিন্তার নতুন নতুন রেখা আঁকে। ভেতরের বদ্ধ দরজা জানালা খুলে ব্যক্তির সামনে তুলে ধরে বিশাল জগত।


কল্পনা করা যাক, একজন ব্যক্তি আজন্ম একটা ঘরে আবদ্ধ। ঘরটাতে অসংখ্য দরজা জানালা আছে, বন্ধ অবস্থায়। শুধু ৫ টা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খোলা জানালা আছে বাহিরের আলো বাতাস আসার,খাবার ও অন্যান্য দ্রব্য সরবরাহ এবং মন চাইলে বাইরে উঁকি দিয়ে দেখার জন্য।


সে ঐ জানালা দিয়ে উকি দিয়ে যতটুকু দেখতে পারে, জগতের সাথে তার ততটুকুই পরিচয়। ফলে জগতের বিশালতা সম্পর্কে সে অজ্ঞ। 


এক একটা বই ঘরের এক একটা দরজা-জানালা ভেঙ্গে বিশাল জগত দেখাতে পারে ব্যক্তিকে। দরজা জানালা গুলো ভাঙ্গলে ব্যক্তির ক্ষতি বলেও মনে হতে পারে। এর জন্য সামান্য কষ্ট লাগাটাও স্বাভাবিক।


এখন বন্দী যদি তার বন্দীত্বকেই পর্যাপ্ত ভেবে দরজা জানালা খোলা থেকে বিরত থাকে। এবং ক্ষুদ্র জানালা দিয়ে দেখা জগতের অংশকেই জগত ভেবে নেয়।তখন দরজা জানালা খোলার যে তাড়না,তাতে শুধু ঠকঠক্ শব্দই হবে। জগত অদেখাই থেকে যাবে। তেমনি আত্মসচেতনাহীন ব্যক্তির ক্ষেত্রেও বইগুলোও শুধু, মেকি জ্ঞানের ঠকঠকানিই বাড়ায়। 

লেখক:

মোহাম্মদ আনিস

The post প্রথমে অজ্ঞতা, পরে প্রাজ্ঞতা appeared first on Bangladesh Study Forum.

ডিসেম্বরের সেরা চার লেখা ও চার বিজয়ী

$
0
0

বাংলাদেশ স্টাডি ফোরাম সেপ্টেম্বর মাসে ঘোষণা দিয়েছিল সেরা লেখকদেরকে পুরুষ্কৃত করবে। গত ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ স্টাডি ফোরামের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ প্রকাশিত লেখাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বাধিক পঠিত চারটি লেখা হচ্ছে:

সানজিদা বারী


সাইফুল্লাহ ওমর নাসিফ

 

বাংলাদেশ স্টাডি ফোরাম থেকে আপনাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

আগামী শনিবার নিয়মিত সাপ্তাহিক সেশনে আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে মহামূল্যবান বই!

উল্লেখ্য বিডিএসএফ একটি জ্ঞানভিত্তিক সংগঠন। আমাদের অধীত জ্ঞান প্রকাশের তিনটি উপায়; বলা, লেখা ও করা। আমাদের নিয়মিত আড্ডা ও পাবলিক লেকচারগুলোতে প্রথমটি সম্পন্ন হয়। দ্বিতীয়টি আমরা নিয়মিত লেখার মাধ্যমে করতে পারি; সেজন্য রয়েছে ফেসবুক গ্রুপ, পেজ ও ওয়েবসাইট। আর আপনার জ্ঞানের সর্বোত্তম প্রকাশ ঘটবে আপনি যখন কিছু করতে পারবেন। আপনার অধীত ও চর্চিত জ্ঞান দিয়ে চলমান বা আসন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।

Image may contain: 1 person, standing and outdoor

শেহনাজ আখন্দ নীলা

বিডিএসএফ এই তিনটি কাজই একসাথে করতে চায়। বিডিএসএফ এর আদর্শ সদস্য হওয়া মানে যারা এই কাজগুলো নিয়মিত করে যাওয়া। বিডিএসএফ শুধু সৌখিন বিদ্যাচর্চার প্লাটফর্ম নয়। আমাদের বিদ্যাচর্চার সাথে সাথে জাতীয়, মানবিক ও সময়ের দায় নিতে হবে তবেই জ্ঞানচর্চা অর্থবহ হবে।

রুহুল আমিন দীপু

আপনার জ্ঞানচর্চার স্মারক সেরা লেখাগুলো পাঠিয়ে দিন আমাদের ওয়েবসাইটে। প্রতি মাসে সর্বাধিক পঠিত ও গুরুত্বপূর্ণ লেখাগুলোর জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরস্কার-মহামূল্যবান বই!

লেখা পাঠান: author@bdsfbd.com এ। এছাড়া বিডিএসএফ এর ফেসবুক পেজেও ইনবক্স করতে পারেন।

The post ডিসেম্বরের সেরা চার লেখা ও চার বিজয়ী appeared first on Bangladesh Study Forum.

পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ই সফলতার মূলমন্ত্র

$
0
0

কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের কাছে পৃথিবীর কোন সাধনাই ব্যর্থ নয়। সফলতম একজন ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সবার প্রথমে প্রয়োজন পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের দৃঢ় মানসিকতা। কিন্তু আমরা যদি ব্যক্তির প্রতিভাকে আগে মূল্যায়ন করি তবে প্রথমেই আমাদেরকে ভুলের ফাঁদে পড়তে হবে। কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায় না থাকলে প্রতিভাও ধীরে ধীরে ব্যক্তির থেকে হারিয়ে যেতে থাকে। আসলে প্রতিভা বলে কিছু আছে বলে আমার মনে হয়না, কেননা মানব সভ্যতাকে আলোকিত করতে যে মানুষগুলো অবদান রেখেছেন তারা প্রত্যেকেই কঠোর পরিশ্রমী, অধ্যবসায়ী এবং প্রচুর প্রাণশক্তির বিনিময়ে নিজের জাত চিনিয়েছেন। বিখ্যাত সুরকার বেটোভেন নিরলস ভাবে সুর সাধনা করে গেছেন বলে বিখ্যাত হতে পেরেছিলেন। প্রথম দিকে তার সুর করা গানগুলো শুনে অন্য সুরকারেরা হাসতেন। কিন্তু অবাক করার বিষয় হল ঐ মানুষগুলোই বেটোভেনকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন কেননা তিনি যে, ততদিনে সাধারণ মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন।

আপনারা এখন যে বিদ্যুৎ বাতি জ্বালিয়ে ঘরকে আলোকিত করছেন প্রতিদিন, সেই বাতি আবিষ্কারে বিজ্ঞানী এডিসন কমপক্ষে দশ হাজার বার অসফল হয়েছিলেন। তাকে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিলো জীবনে তিনি কতবার ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি বলেছিলেন কমপক্ষে দশ হাজার বার। প্রশ্নকর্তা আবার জিজ্ঞেস করলেন- ‘এতবারই যদি ব্যর্থ হন তবে সফল হলেন কিভাবে?’ তখন তিনি বললেন, “আমি যখনই ব্যর্থ হই তখনই নতুন কিছু আইডিয়া আমার মাথায় আসে এবং আমি আবার নতুন করে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে কাজ শুরু করি এবং সফল হই। আমি দশ হাজার বার ব্যর্থ হয়েছি তার মানে দশ হাজারটি নতুন আইডিয়া আমার মাথায় এসেছে”।

তিনি যদি তাঁর কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়কে থামিয়ে দিতেন তাহলে পৃথিবী আজ এতো আলোকিত হতো না। আসলে আমরা যখন একজন মানুষকে সফলকাম হতে দেখি তখন তাকে বলি প্রতিভাবান, এতে করে কি তার পরিশ্রম আর অধ্যবসায়কে অবজ্ঞা করা হল না? যারা পৃথিবীকে প্রতিনিয়ত আলো দেখিয়ে চলেছেন তাদের জীবনীগুলো পড়ে দেখুন, দেখবেন তাদেরকে অনেকটা সময় অমেধাবী ছাত্র/ছাত্রী হিসেবেই গণ্য করা হয়েছিল। তাহলে এখানে প্রতিভার অবদান কি রইলো বলতে পারেন?

আমেরিকার বিখ্যাত উপন্যাসিক জ্যাক লন্ডন এর নাম আপনারা হয়তো শুনে থাকবেন। এই ব্যক্তিটি জীবন চালাতেন ভিক্ষাবৃত্তি আর ভবঘুরেপনা করে। একদিন এক পুলিশ তার এই কাজের জন্য এক মাস তাকে জেলে পুরে দিলেন। কিন্তু অবাক করার বিষয় হচ্ছে এই ভবঘুরে ব্যক্তিটিই ছয় বছর পরে আমেরিকার সাহিত্যে একজন জরুরি ব্যক্তি হিসেবে আবির্ভূত হলেন। তিনি কী করেছিলেন জানেন? জেল থেকে ছাড়া পাবার পর ভুল বশত একটা পাবলিক লাইব্রেরীতে প্রবেশ করেছিলেন এবং সেখানে ভুল বশত ইংরেজী সাহিত্যের ডিফোর উপন্যাস রবিনসন ক্রুসো পড়েছিলেন। এই উপন্যাসটি পড়ার পরে তার আগ্রহ এতটাই বেড়ে গেল যে চার বছরের কোর্স মাত্র তিন মাসেই শেষ করে ফেললেন। তারপর তিনি বিখ্যাত উপন্যাসগুলো বারবার পড়তে লাগলেন এবং লিখতে লাগলেন দিনে পাঁচ হাজার করে শব্দ। তিনি ‘দ্য কল অব দ্যা ওয়াইল্ড’ লিখে রাতারাতি বিখ্যাত হয়েছিলেন। সাহিত্যচর্চা শুরু করার মাত্র ১৮ বছর পর তিনি পরলোকগমন করেন। তাঁর বইগুলোর কদর এখনো আমেরিকায় যথেষ্ট রয়েছে। তাঁর বাৎসরিক আয় ছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এর চেয়ে দ্বিগুণ! পরিশ্রম এবং অধ্যবসায় না থাকলে কি তিনি সার্থক হতে পারতেন, আপনারাই বলুন?

আচ্ছা মেনে নিচ্ছি প্রতিভা বলে কিছু আছে কিন্তু পরিশ্রমীদের কাছে এরাও পরাজিত হন কেননা প্রতিভাবানরা এক ঘন্টায় যে কাজ করেন পরিশ্রমীরা সেই কাজ করেন তিন ঘন্টায় যার ফলে পরিশ্রমীদের কাছে শ্রমের সার্থকতার মূল্য বেড়ে যায় বহুগুণ। অন্যদিকে কম পরিশ্রম করে সফলতা পাওয়ার কারণে প্রতিভাবানরা শ্রমবিমুখ হন, যার ফলে তারা জীবনের শেষ প্রান্তে এসে পরিশ্রমীদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে পড়েন এবং আফসোস করে বলেন, “আমি যদি আরো একটু পরিশ্রম করতাম তাহলে আমার জীবনটা অন্যরকম হতে পারতো”।

কিন্তু জীবনের ক্রান্তি লগ্নে পৌঁছে এ ভাবনা কেবল হতাশার পাল্লাই ভারি করতে থাকে। সুতরাং একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার জন্য ভাগ্য এবং প্রতিভার অযুহাত ছেড়ে যত তাড়াতাড়ি কঠোর পরিশ্রম, সাধনা এবং নিরলস অধ্যবসায়ে আত্মনিয়োগ করা যাবে তত দ্রুতই সোনালি ভবিষ্যতের পথ আমাদের জন্য মসৃণ হবে।

 

লেখক : Nirupam Niru

             University of Comilla

 

The post পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ই সফলতার মূলমন্ত্র appeared first on Bangladesh Study Forum.

Viewing all 635 articles
Browse latest View live